পাবনা প্রতিনিধি : ১৬ ডিসেম্বর যখন সারা বাংলাদেশ আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসছিল, তখনও পাবনা শত্রুু মুক্ত হয়নি। বিজয় দিবসের এক সন্ধিক্ষণে ঢাকার সরওয়ার্দী উদ্যোনে যখন জিওসি, পূর্বাঞ্চলীয় ভারতীয় বাহিনী ও বাংলাদেশ বাহিনীর সর্বাধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং আরোরা’র সাথে সাময়িক আইন প্রশাসক, জোন-বি এবং পাকিস্তান বাহিনীর পূর্বাঞ্চল কমান্ডের লেফটেন্যান্ট জেনারেল অধিনায়ক আমির আব্দুল্লাহ আল নিয়াজী ও মুক্তিযুদ্ধের র্সাধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) এ কে খন্দকারের উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণের দলিল সম্পাদিত হচ্ছিল তখনও পাবনা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়নি।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামের একটি রাষ্ট্রের জন্ম হলেও উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন জেলা হিসেবে খ্যাত পাবনা ১৮ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনতার ২ দিন পর শক্রু মুক্ত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, পাবনায় অবস্থানকারী পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে যখন চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়। তখনও তারা আত্মসমপর্ণ করেনি এদেশীয় মুক্তিবাহিনীর কাছে। কারণ তাদের ভয় ছিল, বাঙালীরা তাদের হত্যা করতে পারে। তাই ১৮ তারিখের শেষ মুর্হুতে তারা ভারতীয় মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাবনা জেলাকে ৭ নং সেক্টরে রাখা হয়েছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর টানা দুই দিন তুমুলযুদ্ধে পাবনার দামাল মুক্তিকামী তূর্য সন্তানেরা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর এবং আল শামসদের পরাজিত করে ১৮ ডিসেম্বর তারা পাবনা শহরে প্রবেশ করেই বিজয় মিছিল বের করে। মিছিল শেষ করে কালেক্টরেট ভবনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিজয়ের পতাকা উড্ডোয়ন করে পাবনাকে শক্রু মুক্তির ঘোষণা দেয়।

মুক্তিযোদ্ধাদের দাবী, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সেই সব বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ হিসেবে যুদ্ধের ২৮ বছর পর ১৯৯৮ সালে পাবনার তৎকালীন জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে কালেক্টরেট ভবনের সামনে একটি বিজয় স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। আর এই বিজয় স্তম্ভের নাম দেয়া হয় “দুর্জয় পাবনা”। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ, ওই স্মৃতিস্তম্ভে এখনও কিছু অমুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারের নাম ঠাই পেয়েছে। সেখান থেকে রাজাকারদের নাম মুছে ফেলার দাবী রয়েছে তাদের।

(পিএইচপি/পি/ডিসেম্বর ১৮, ২০১৪)