বান্দরবান প্রতিনিধি :বান্দরবানে চারদিন ব্যাপী শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাজপূন্যাহ উৎসব শুরু হয়েছে আজ। প্রতিবছর প্রজাদের কাছ থেকে জুমের বাৎসরিক খাজনা আদায় অনুষ্ঠান হিসেবে রাজ পূণ্যাহ মেলার আয়োজন করা হয়।

আজ শুক্রবার সকালে রাজপূন্যাহ উৎসবের উদ্বোধনী দিনে ঐতিহ্যবাহী রাজকীয় পোষাক পরিধান করে রাজবাড়ী থেকে রাজকীয় বাঁশির সুরে অনুষ্ঠানস্থলে নেমে আসেন বান্দরবান বোমাং সার্কেল চীফ ১৭ তম রাজা ইঞ্জিনিয়ার উচপ্রু মারমা।

এসময় তার সৈন্য-সামন্ত, উজির-নাজির, সিপাহী শালাররা রাজাকে গার্ড দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল মঞ্চে নিয়ে যান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। এ ছাড়াও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাই থই অং মারমা, বান্দরবান জেলা প্রশাসক কে এম তারিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার বেবদাস ভট্টাচার্য্য, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ফারুক আহমেদ, ইউএনডিপি প্রতিনিধি নিক বেরেস ফোর্ডসহ সরকারী-বেসরকারী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বোমাং রাজা সিংহাসনে উপবিষ্ট হলে সারিবদ্ধভাবে বান্দরবান জেলার ৭টি উপজেলার ১০৯টি মৌজার হেডম্যান, ৮ শতাধিকেরও বেশি কারবারী, রোয়াজারা রাজাকে কুনিশ করে জুমের বাৎসরিক খাজনা ও উপঢৌকন রাজার হাতে তুলে দেন।

১৮৭৫ সালে ৫ম তম বোমাং রাজা সাক হ্ন ঞো’র আমল থেকে বংশ পরস্পরায় ধারাবাহিক ভাবে প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী রাজপূণ্যাহ উৎসব হয়ে আসছে। রাজপূণ্যাহ মেলায় বসেছে নাগর দোলা, সার্কাস, বিচিত্রানুষ্ঠানু, পুতুল নাচ, মৃত্যুকূপসহ ব্যাাতিক্রমি নানা আয়োজন। এছাড়াও হরেক রকম জিনিসপত্রের দোকান এবং সারারাত ব্যাপী চলবে যাত্রা অনুষ্ঠান। রাজপূণ্যাহ পরিণত উৎসব পাহাড়ী-বাঙ্গালীর মিলন মেলায় পরিনত হবে। শুধুমাত্র বান্দরবান, রাঙামাটি নয় রাজপূণ্যাহ মেলা দেখতে ভীড় জমাচ্ছেন দেশী-বিদেশী হাজারো পর্যটকও।



(এএফবি/এসসি/ডিসেম্বর১৯,২০১৪)