ডেস্ক রিপোর্ট : ছেলেবেলায় সবকিছুর দায়িত্ব থাকে মা-বাবার। থাকা, খাওয়া, পোশাক ও সুস্থতার সবকিছুই মা-বাবার নজরদারিতে হয়। অতি আদরের সন্তানটি তাই চোখ বন্ধ করেই পার করে দিতে পারে জীবনের অনেকটা সময়। অনেকের আবার এই অভ্যাস থেকে যায় বড়বেলা পর্যন্ত। সন্তানকে যখন জীবনের প্রয়োজনে বাবা-মা ছেড়ে দূরে থাকতে হয় তখন সে অসহায় বোধ করে। জীবনের অনেক কাজেই বিফল হয়ে ফিরে আসতেও বাধ্য হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত এই সমস্যায় রেহাই পেতে বাচ্চাকে ছোটবেলা থেকেই স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিৎ।

* বাবা-মা যখন কাজ করেন, অধিকাংশ বাচ্চাদের মধ্যে সেই কাজ করার প্রবণতা দেখা যায়। এক্ষেত্রে তাদের কাজে বাধা দিয়ে খেলা করা বা পড়ার নির্দেশ দেয়া হয়। অথচ মা বাচ্চাকে ছোট ছোট কাজে বাচ্চাকে দায়িত্ব নিতে উদ্বুদ্ধ করে তবে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। বাচ্চার নিজের জামাকাপড় ভাঁজ করা, স্কুল ব্যাগ গোছানো, টিফিন বক্স ধুয়ে পরিস্কার করা, বাড়ির মুরব্বীদের খাবার এগিয়ে দেয়া, নিজে খাওয়ার অভ্যাস করা ইত্যাদি কাজ করতে পারে।

* বাচ্চা যখন একটু বড় হচ্ছে তখন তার দায়িত্ব আর একটু বাড়িয়ে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে বাচ্চা তার খাবার প্লেটটা যথা সময়ে ধুয়ে জায়গায় রাখা শিখতে পারে। নিজের শোবার ঘরটি দিনে অন্তত একবার ঝাড়ু দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলবে। পরনের কাপড়টি পরিবর্তন করার পর মেলে দেবে, নিজের খেলনা গুলো গুছিয়ে রাখবে, একা গোসল করা শিখবে,চুল চিরুনি করা শিখবে ছোটবেলা থেকেই। বাচ্চার কাজে আপনার প্রসংশা তাকে আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করবে। এভাবে তার মধ্যে আরও বেশি দায়িত্বশীলতা বাড়বে।

* দায়িত্ব নিতে শেখানোর সঙ্গে বাচ্চাকে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতাও দিতে হবে। উৎসব বা অনুষ্ঠানে সে কোন পোশাকটি পরবে, বাবা-মায়ের সঙ্গে শপিং এ গিয়ে কোন পোশাকটি কিনবে, কোন বিষয়ে পড়ার আগ্রহ তার বেশি এসব বিষয়েই গুরুত্ব দিতে হবে। তবে তার আগে সন্তানকে ভালো মন্দের বিষয়ে পরিস্কার ধারণা দিতে হবে। এতে সে সিদ্ধান্ত নেয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।

* বাচ্চার বয়স ৭ থেকে ৮ বছর হলে বাড়ির কিছু কাজ নিজ দায়িত্বে করা উচিৎ। এবয়সে খাবার পরিবেশনে মাকে সাহায্য করা, বাড়িতে অতিথি এলে একটু আধটু নাস্তা এগিয়ে দেয়া, ছোট ভাই-বোনের উপর নজর রাখা বাচ্চা অনায়াসেই করতে পারবে। তবে ও যখন কাজ করবে আপনি আশেপাশেই থাকুন যাতে কোনও রকম দুর্ঘটনা না ঘটে। এভাবে একটি বাচ্চা বড় হতে থাকলে নিজের জীবনের অনেক কাজ গুছিয়ে করা শিখবে। একা থাকার মুহুর্তেও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে তার কষ্ট হবে না।

(ওএস/এইচআর/ডিসেম্বর ২০, ২০১৪)