মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : আশ্রিত না হয়ে নিজ ভিটায় মরতে চান মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান। ৭১এর মুক্তিযোদ্ধে লড়াকু সৈনিক হিসাবে যিনি বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে দেশ মাতৃকাকে মুক্ত করে স্বাধীন করেছেন সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান (৬৮) বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফেরি করে মালামাল বিক্রি করে খেয়ে না খেয়ে কোনভাবে বেঁচে আছেন।

১৯৭১ সালে ১১নং সেক্টরে সিরাজ কোম্পানিতে ১শ ২৫ জনের একটি দল নিয়ে তোরা থেকে বিরিশিরি, ফান্দা, রাঙ্গামাটিয়া যুদ্ধ করে পরে দূর্গাপুর হানাদার মুক্ত করেন। সেই সময়ের তার সহযোদ্ধারা আজও অনেকেই বেঁচে আছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার কিছুদিন পরেই মুক্তিযোদ্ধারা যথাযথ সম্মান না পাওয়ায় অর্থনৈতিক দৈন্যতায় মজিবুর রহমান শেষ সম্বল নেত্রকোণার মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের পূর্ব ঘাটুয়া গ্রামে পৈত্রিক ভিটা বিক্রি করে কাজের সন্ধানে সিলেট শহরে চলে যান।

বয়সের ভারে নুজ্ব্য হয়ে যাওয়ায় ভারি কাজ করতে না পারায় সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকে। এ অবস্থায় তার ৩ ছেলে বৃদ্ধা বাবা মাকে ফেলে নিখোঁজ হয়ে যায়। আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বৃদ্ধি করায় তার নিজের গ্রামে অসহায় অবস্থায় এসে অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে দ্বারে দ্বারে ফেরি করে মালামাল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকে। তার নিজ ভিটা ক্রয়ের সামর্থ নেই। মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান আমাদের এই সংবাদদাতার সাক্ষাত কারে আবেগ জনিত কন্ঠে আশ্রিত না হয়ে নিজ ভিটায় মরতে পারলে তার জীবনের আকাংকা পূর্ণ হত বলে মত প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেন। উপজেলা কমান্ডার হেলাল উদ্দিন তালুকদার জানান, মজিবুর রহমান একজন সাহসী যোদ্ধা ছিলেন। কিন্ত সেই সাহসী সৈনিক আজ ফেরি করে মালামাল বিক্রি করে কোনভাবে জীবন ধারণ করছেন। তাঁর ভিটা ক্রয়ের জন্য তিনি সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

(এএমএ/এএস/ডিসেম্বর ২১, ২০১৪)