লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়ায় আইন অমান্য করে বিভিন্ন খাল-বিল, ঝোপ-ঝাড় থেকে নির্বিচারে কচ্ছপ নিধন করা হচ্ছে। এসব কচ্ছপ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে প্রকাশ্যে বেচাকেনা হচ্ছে। অথচ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রয়েছে নিরব-নির্বিকার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া, এঁড়েন্দা, দিঘলিয়া, মানিকগঞ্জ, নলদী, মিঠাপুর, কালিগঞ্জ, বড়দিয়াসহ অন্যান্য হাটে প্রকাশ্যে কচ্ছপ বেচাকেনা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিক্রেতা জানান, সব সময় কচ্ছপ শিকার করা সম্ভব হয় না। সাধারনত বছরের অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু করে বৈশাখ মাস পর্যন্ত কচ্ছপ শিকারের উপযুক্ত মৌসুম। এ সময় খাল-বিলে পানি কমে যাওয়ায় কচ্ছপ ধরা পড়ে বেশি।



কচ্ছপ শিকারের জন্য এক শ্রেণির মানুষেরা তৎপর রয়েছে। এরা সাধারণত দরিদ্র ও নিম্নবর্গের মানুষ। সর্বগ্রাসী অভাবের কারনে এ সব মানুষেরা কচ্ছপ শিকার করতে বাধ্য হচ্ছে। এ সব শিকারীরা ১ থেকে ৩ ফুট পানির নিচে থেকে সড়কি জাতীয় এক ধরনের বিশেষ হাতিয়ার দিয়ে কচ্ছপ শিকার করে থাকে।

আলাপকালে শিকারীরা আরও বলেন, উপজেলার নলদী, কুমড়ী ও মিঠাপুর বিল থেকে কচ্ছপ শিকার করা হয় বেশি। আকার ভেদে এখানকার হাট-বাজার গুলোতে কচ্ছপ বিক্রি হয় ৪’শ থেকে সাড়ে ৪’শ টাকা দরে। কচ্ছপ বিক্রেতা দীনেশ, মনোরঞ্জন ও কার্তিক বিশ্বাস জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা হাটে কচ্ছপ বিক্রি করে আসছেন। দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় তাদের লাভও হয় বেশি।

নির্বিচারে কচ্ছপ নিধনের ব্যাপারে স্থানীয় পরিবেশবিদ ও লোহাগড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদ আলম ইরোজ বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কচ্ছপের অপরিকল্পিত শিকার ও বিক্রি বন্ধ করা জরুরী। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কচ্ছপ শিকার ও বিক্রি বন্ধের ব্যাপারে কোন ভূমিকা গ্রহন করছেন না। নির্বিচারে কচ্ছপ নিধনের ফলে জীব-বৈচিত্র্য ও প্রকৃতি পরিবেশের ওপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। ফলে প্রায় বিলুপ্তির পথে কচ্ছপ।

(আরএম/এএস/ডিসেম্বর ২৫, ২০১৪)