নওগাঁ প্রতিনিধি : চলতি মৌসুমে নওগাঁ জেলায় ৩৪ হাজার ৭শ’ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। ক্ষেতে রোগ-বালাই নেই। ফুল ফোটার সময় ঘন কুয়াশাও তেমন ছিল না। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুল থাকলে জেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছে জেলা কৃষি অফিস। তবে এ বছর গমের আবাদ বেশি হওয়ায় প্রায় ৩শ’ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ কম হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সত্যব্রত সাহা জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৪ হাজার ৮শ’ ৭২ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারন করা হয়েছিল। সেখানে চাষ হয়েছে ৩৪ হাজার ৭শ’ হেক্টর জমিতে। কৃষকরা এ বছর স্থানীয় জাতের পাশাপাশি উন্নত জাতের টরি-৭, বারি-১৪ ও ১৫, সম্পদ ও বিনা-৪ চাষ করেছে। আবহাওয়া অনুকুল হলে এ চাষ থেকেই উৎপাদনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার জেলার মান্দা উপজেলার কালীগ্রাম, ছোটমুল্লুক, বড়মুল্লুক, ফতেপুর ও ভারশোঁ এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, আগে চাষ করা ক্ষেতে সরিষার ফুল প্রায় ঝরে গেছে। অনেক জমিতে গাছে পাক ধরেছে। আগামি দু’সপ্তাহের মধ্যেই জমি থেকে সরিষা তোলার কাজ শুরু হতে পারে বলে আশা করছেন কৃষকরা। মল্লিকপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ এবছর ৪বিঘা জমিতে বারি-১৫ ও একই গ্রামের আব্দুর রশিদ আড়াই বিঘা জমিতে সম্পদ জাতের সরিষার চাষ করেছেন। বড়মুল্লুক গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ৩বিঘা জমিতে বারি-১৪, ভারশোঁ গ্রামের সাইদুর রহমান ৫বিঘা জমিতে টরি-৭ ও একই গ্রামের পরেশ চন্দ্র ১০ বিঘা জমিতে বারি-১৪, মুহাম্মদপুর গ্রামের সুমন ৮ বিঘা ও বালিচ গ্রামের হান্নান ১০ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের সরিষার চাষ করেছেন।

এসব কৃষকরা জানান, আমন ধান কেটে নেয়ার পর জমিগুলো পতিত অবস্থায় পড়ে থাকে। আমন ও বোরো ধানের মধ্যবর্তী সময়ে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে ওইসব জমিতে সরিষার চাষ করেছেন তারা। এতে একদিকে যেমন বাড়তি আয় হবে অন্যদিকে সরিষার ডাটা জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার হবে। এছাড়া সরিষার জমিতে পানি নিয়ে অল্প চাষেই বোরো ধান রোপন করা যায়। সরিষার ফসল থেকে অর্জিত বাড়তি আয় বোরো ধান উৎপাদনে সহায়তা করে বলেও কৃষকরা দাবি করেন।

জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এবারের আবহাওয়া সরিষার চাষের জন্য অনুকুল। ক্ষেতে রোগ বালাইও নেই। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুল থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, ফুল ঝরে গেলে সরিষার ক্ষেতে জাপ পোকার আক্রমন হবার সম্ভাবনা থাকে। তবে, এবছর জেলার কোনো এলাকায় এ ধরণের খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। এ রোগ সম্পর্কে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের আগেই সচেতন করে দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

(বিএম/এএস/ডিসেম্বর ২৫, ২০১৪)