কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষের দূর্ভোগ কমছেই না। পর্যাপ্ত ডাক্তার নিয়োগ হলেও এখন রোগীদের চিকিৎসা নিতে এসে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। সকালে রোগীরা আসলেও ভিজিট বাণিজ্যের কারণে চিকিৎসা শুরু হয় দুপুর একটার পর। প্রতিটি সার্জারীতে হাসপাতালের ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য সেবার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে জনমত জরিপে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

এ্যাসোসিয়েশন অব ভলান্টারী এ্যাকশনস ফর সোসাইটি (আভাস) ও একশন এইড বাংলাদেশ’র সহায়তায় কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ও বালিয়াতলী ইউনিয়নের চিকিৎসা নিতে আসা ১৯০ জন মানুষের উপর এক জরিপে ফুটে উঠে কলাপাড়া উপজেলার স্বাস্থ্য সেবার এ বেহাল চিত্র।

জরিপে দেখা গেছে শতকারা ৪৭ ভাগ মানুষ জানান চিকিৎসকরা অফিস টাইমে ভিজিট নেন। একশ ভাগ মানুষই বলেন হাসপাতালে পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ থাকলে তা দেয়া হয়না। ৭৪ ভাগ মানুষ বলেন হাসপাতালের চিকিৎসার সার্বিক পরিবেশ নারী বান্ধব না। ৬৩ ভাগ মানুষ বলেন হাসপাতালে রোগীদের বসার,খাবার পানি ও টয়লেটের সুবিধা নেই। ৫৮ ভাগ নারী বলেন হাসপাতালে নারীদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। ৪০ ভাগ মানুষ বলেন হাসপাতালের খাবারের মান ভালো না। ৩৭ ভাগ মানুষ বলেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সাথে কর্মচারীরা র্দুব্যবহার করেন। ৮৬ ভাগ মানুষ বলেন হাসপাতালে জেনারেটর থাকলেও বিদ্যুৎ গেলে রোগীদের মোম কিনে ধরাতে হয়। ৬৪ ভাগ মানুষ বলেন সার্জারী ব্যতিত টাকা নেয়া হয়না, তবে ৩৬ ভাগ মানুষ বলেন প্রাথমিক চিকিৎসায় তাদের টাকা দিতে হয়। ৮৪ ভাগ মানুষ হাসপাতালে ডায়গনষ্টিক সুবিধা আছে কিন্তু কিকি সুবিধা পাওয়া যায়না তা তারা জানেন না।

৮৬ ভাগ মানুষ বলেন এক্স্ররে করতে একশ টাকা নেয়া হয়। ৩৯ ভাগ মানুষ বলেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে ওষুধ ও পরামর্শের জন্য টাকা নেয়া হয়। অতিদরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা বরাদ্দ থাকলেও ৬৮ ভাগ মানুষ বলেন এই সুবিধা তাদের দেয়া হয়না। জরিপে উপজেলার স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে হাসপাতালে জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে ১০ কনসালটেন্ট নিয়োগ দেয়া সহ পর্যাপ্ত ওষুধ, হাসপাতালের পর্যাপ্ত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও হাসপাতালের পয়ঃনিস্কাশনের জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বলেন, হাসপাতালে দুপুর একটার আগে কোন ভিজিট নেয়া হয়না। সার্জারীতে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয়না বলে তিনি জানান। তবে হাসপাতালে এখনও বিভিন্ন ওষুধ সংকট ও সমস্যার কথা তিনি স্বীকার করেন।

(এমকেআর/এএস/ডিসম্বের ২৬, ২০১৪)