শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর খানকান্দি গামে জমিজমা বিরোধের জের ধরে আপন চাচা- চাচির হাতে ১১ বছরের এক শিশু খুন হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  শিশুটিকে হাত-পা বেঁেধ গলায় রশি লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে আটক জাজিরা থানা পুলিশ। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর খানকান্দি গ্রামের মৃত সেকলদ্দিন খানের ছেলে ফারুক খান ও তার বড় ভাই মজিবুর রহমান খানের সাথে দীর্ঘদিন যাবত জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জের ধরে ইতিপূর্বে মজিবর খান তার ভাই ফারুখের বিরুদ্ধে ২টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাকে হয়রানি করে। ফারুখ ও মজিবুরের চাচা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন খান তাদের বিরোধ মীমাংসার জন্য কয়েকবার সালিশ করে ব্যর্থ হয়।

মজিবুরের স্ত্রী আয়েশা বেগম কয়েকদিন আগে ফারুকের স্ত্রী কমলা বেগমকে সন্তান হারানোর হুমকি দিয়েছে বলেও জানায় এলাকাবাসী। দুর্জয় শনিবার রাত আনুমানিক ৯ টা পর্যন্ত বাড়ির কাছে একটি চায়ের দোকানে বসে টেলিভিশন দেখা শেষে বাড়ি ফিরছিল। বাড়ি ফেরার পথেই দূর্জয়কে ধরে নিয়ে তার হাত ও পা বেধে গলায় রশি পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে খানকান্দি উত্তরপাড় বিলের মাঝে একটি ধনিয়া ক্ষেতের মধ্যে লাশ ফেলে রেখে যায়।

মা বাবা সারা রাত দূর্জয়কে কোথাও খুজে না পাশের খোরাতলা গ্রামে ওয়াজ মাহফিল শুনতে গিয়েছে ভেবে গভীর রাতে তারা ঘুমিয়ে পরে। রবিবার সকালে লোকজন বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দুরে ধনিয়া ক্ষেতের মধ্যে শিশু দুর্জয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখে জাজিরা থানায় পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে প্রথমে জাজিরা থানায় ও পরে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ফারুখের ভাই মজিবুর রহমান খান ও তার স্ত্রী আয়শা বেগম, মজিবর খানের শ্যালক সুলতান হোসেন হাওলাদার,সুলতানের ছেলে শাহিন হাওলাদারকে আটক করেছে জাজিরা থানা পুলিশ । এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

নিহত দূর্জয়ের মা কমলা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমাদের সামান্য এক চিলতে জমির জন্য আমার ভাসুর মজিবর খা দীর্ঘ দিন যাবৎ আমাদের উপর অনেক ধরনের অত্যাচার নির্যাতন এমনকি মামলা মোকদ্দমা করে হয়রানি করে আসতেছিল। আমরা বার বার সমাজের লোকদের কাছে নালিস করেও ন্যায় বিচার পাইনি। কয়দিন আগে মজিবরের স্ত্রী আয়শা আমার সন্তান কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। ওরাই আমার বুকের মানিককে হত্যা করেছে। আমি এই খুনিদের ফাঁসি চাই।

জাজিরা থানার ওসি একরাম আলী মিয়া বলেন, আমরা জানতে পেরেছি দূর্জয়ের চাচা মজিবর খানের সাথে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে এ খুনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

শরীয়তপুরের সহকারী পুলিশ সুপার তানভির হায়দার শাওন বলেন , এ খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ৪ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসা বাদের জন্য আনা হয়েছে। পরবর্তীতে মামলার তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(কেএনআই/এএস/জানুয়ারি ০৪, ২০১৫)