স্টাফ রিপোর্টার :দেশে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে যেসব মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে সেগুলোতে শিক্ষার মান ‘ঠিক’ রাখতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার সরকারি নতুন ১১টি মেডিকেল কলেজের উদ্বোধনের সময় এ নির্দেশ দেন তিনি।

মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এর পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও প্রচুর মেডিকেল কলেজ অনুমোদন দিয়েছি। আমরা আরো ৬টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ দিচ্ছি।

“স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করবো, এই মেডিকেল কলেজগুলোর মান যেন ঠিক থাকে। রোগী মারা ডাক্তার যেন না হয়-এদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।”

মেডিকেল কলেজগুলোয় যথাযথভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে কি না তা নিবিড়ভাবে পরিবেক্ষণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।

মেডিকেল শিক্ষার্থীদের প্রতি ঠিকমতো লেখাপড়া করে ‘সত্যিকারভাবে মানুষের সেবা’ করার উদ্দেশ্য নিয়ে বের হওয়ার জন্য আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধনের পর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১১টি জেলায় মেডিকেল কলেজগুলোর কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

নতুন প্রতিষ্ঠিত হওয়া ১১টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে ছয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং পাঁচটি সেনাবাহিনীর অধীনে।

এর ফলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশে সরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা দাঁড়াল ২৯টিতে এবং সেনা সদরের অধীনে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা দাঁড়াল ছয়টিতে। এছাড়া দেশে আরো ৬৩টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে কার্যক্রম শুরু করা মেডিকেল কলেজগুলো হয়েছে টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, জামালপুর, পটুয়াখালী ও রাঙামাটিতে। সেনাবাহিনীর অধীনে মেডিকেল কলেজগুলো হয়েছে চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর, বগুড়া ও কুমিল্লায়।

শেখ হাসিনা বলেন, “চিকিৎসা সেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। মানুষ ধুঁকে ধুঁকে মরবে-এটা স্বাধীন বাংলাদেশে হতে পারে না।”

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সারা বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ডাক্তারদের সংখ্যা এত সীমিত যে, ডাক্তারদের ওপর অনেক চাপ পড়ে। এজন্য দরকার আরো মেডিকেল কলেজ।”

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালেই দেশের একমাত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। আরো দুটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে। পর্যায়ক্রমে সাতটি বিভাগীয় শহরেই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।

পরবর্তীতে আরো একটি বিভাগ সৃষ্টি করার ‘ইচ্ছা’ তার সরকারের রয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় করবে সরকার।

“৬৪ জেলায় যে পরিমাণ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান আমাদের প্রয়োজন সে পরিমাণ নেই। বিশেষ করে মেডিকেল কলেজ; এই দিকটা খুবই অবহেলিত। আমরা এটা অবহেলিত রাখতে চাই না।”

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমসহ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।



(ওএস/এসসি/ জানুয়ারি ১০,২০১৫)