ডেস্ক রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে ফের মুখ খুললেন মনিকা লিওনস্কি। হোয়াইট হাউসের এই সাবেক শিক্ষানবিশ কর্মী জানান, বিল ক্লিনটন যে তার কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছে, এতে কোনো সন্দেহই নেই।

তবে তাদের সম্পর্কটা পরস্পরের সম্মতিতেই হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মনিকা আরও জানান, তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে যদি কোনো অপব্যবহারের বিষয় জড়িত থাকে, সেটা হয়েছে যখন প্রেসিডেন্টের বিরোধীপক্ষ মনিকাকে রাজনৈতিক গুটি হিসেবে ব্যবহার করেছে।

ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিনের চলতি সংখ্যায় এসব কথা লিখেছেন মনিকা।

মনিকা ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিনে লিখেছেন, ‘হ্যাঁ অবশ্যই আমার বস আমার থেকে সুবিধা নিয়েছিলেন। তবে তার সঙ্গে আমার যে সম্পর্ক ছিল তা দুইজনের সম্মতির ভিত্তিতেই হয়েছিল। আর এটা আমি সব সময়ই দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। আমাকে যদি তিনি ব্যবহার করেই থাকেন তবে তা করেছিলেন ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, যখন আমি তার শক্তিশালী অবস্থান টিকিয়ে রাখার গুটিতে পরিণত হয়েছিলাম।’

ক্লিনটনের মেয়াদ শেষে অন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনগুলোর আগে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে চায়নি বলেই নিজের প্রেমের ব্যাপারে চুপ ছিলেন বলে ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিনে লিখেছেন মনিকা। তবে চুপ থাকার দিন শেষ উল্লেখ করে মনিকা লিখেছেন, ‘আমি আমার গল্পের একটা ভিন্ন সমাপ্তি টানতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমি শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাধার প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াবার।’

হোয়াইট হাউসের সাবেক এই শিক্ষানবিশ ৪০ বছর বয়সে পা রেখেছেন নিজেকে ইন্টারনেট যুগের প্রথম ভূক্তভোগী বলে উল্লেখ করেছেন মনিকা। এর সঙ্গে তিনি অনলাইনে অন্য যারা হেনস্তার স্বীকার হয়েছেন তাদের পক্ষেও কথা বলতে চান বলে জানিয়েছেন।

অবশ্য ক্লিনটনের সঙ্গে কেলেঙ্কারির বিষয়ে মনিকার এটাই প্রথম বক্তব্য নয়। এর আগে ১৯৯৯ সালে বারবারা ওয়ালটার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে প্রথম নীরবতা ভাঙেন মনিকা। এরপর মনিকা এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। ১৯৯৯ সালে ‘মনিকাস স্টোরি’ নামে মনিকার জীবনী লিখেন লেখক অ্যান্ড্রু মর্টন।

মনিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে। এ জন্য ১৯৯৮ সালে বিল ক্লিনটনকে অভিসংশন করে মার্কিন কংগ্রেসের প্র্তিনিধি পরিষদ। তবে সিনেট তাকে নির্দোষ ঘোষণা করলে তিনি ২০০১ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষ করেন।

এদিকে মনিকা এমন সময়ে ক্লিনটনের সঙ্গে প্রেমের বিষয়ে আবার মুখ খুললেন যখন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি হিলারি রডহাম ক্লিনটন ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ভাবছেন। তবে নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে হিলারির স্বামী যে কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছিলেন ২০১৬ সালের নির্বচানে তা টেনে না আনার ইঙ্গিতই দিয়েছেন বিরোধী রিপাবলিকান পার্টি।

রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট পদের সম্ভাব্য প্রতিযোগী কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যের সিনেটর র‌্যান্ড পল নারীদের বিষয়ে তার দলকে নিয়ে করা সমালোচনার জবাবে বলেন, ‘সাবেক ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট তো নারীদের প্রতি শিকারীর মতো মনোভাব পোষণ করতেন। ১৯৯৫ সাল থেকে মনিকার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ক্লিনটন। ১৯৯৮ সালে কংগ্রেসের প্র্তিনিধি পরিষদ অভিসংশনে আনলে মিথ্যা বলেন ক্লিনটন। আর এতেই তাকে নির্দোষ ঘোষণা করে সিনেট।’

(ওএস/এইচআর/মে ০৭, ২০১৪)