ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মসজিদের জায়গা থেকে শিশু গাছ কেটে নিচ্ছেন স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতা। উপজেলার চাপরাইল বাজার জামে মসজিদের এই গাছ পাশ্ববর্তী গোমরাইল গ্রামের তৈয়ব আলী কেটে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন মসজিদ কমিটি। ইতোমধ্যে ৪ টি বড় গাছ কেটে নিয়েছেন, আর কমপক্ষে ২০ টি গাছের বড় বড় ডাল কেটেছেন। গাছগুলো কাটার চেষ্টা চলছে। অবশ্য তৈয়ব আলী এই জমি তার বলে দাবি করেছেন। এক সময় তাদের এলাকায় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি দখল করে নিজের নামে কাগজপত্র করে নেন। সেই ব্যক্তি মসজিদে দান করেন। যেহেতু তাদের কেউ জমি বিক্রি করেননি, সেহেতু তিনি জমি ফেরত পাবেন। ইতোমধ্যে আদালতে মামলা করেছেন। মসজিদ কমিটির সহ-সম্পাদক আসাদুর রহমান অবশ্য দাবি করেছেন মামলা করার পর জমিতে উভয় পক্ষের প্রবেশাধিকার নিশেষ রয়েছে।

সেটা অমান্য করে তৈয়ব আলী মসজিদের লোকজনের লাগানো গাছ কেটে নিচ্ছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাপরাইল বাজার আর গোমরাইল গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে চিত্রা নদী। নদীর পূর্ব পাশে মসজিদ আর পশ্চিম পাশে গোমরাইল মৌজায় রয়েছে মসজিদের ৬৪ শতক জমি। ৩৫৮ খতিয়ানে এস.এ ৫৫১ নম্বর ৬৪ শতক জমি ৬২ সালের পূর্বে মালিক ছনু মন্ডল চাপরাইল গ্রামের সৈয়দ আক্তার হোসেন ও সৈয়দ আনিচুর রহমান এর কাছে বিক্রি করেন। ১৯৭৪ সালে ওই জমি তারা মসজিদকে দান করেন। সেই থেকে জমিটা মসজিদ ভোগদখল করে আসছেন। জমিতে চাষাবাদ করে যে আয় হয় তা দিয়ে মসজিদের খরচ চলে। মসজিদ কমিটির সহ-সম্পাদক আসাদুর রহমান জানান, আনুমানিক ১৫ বছর পূর্বে জমিতে তারা ৬৪ টি শিশু গাছ রোপন করেন। যার মধ্যে ৫ টি গাছ নষ্ট হয়ে গেছে, বাকি গাছগুলো এখন বেশ বড় হয়েছে। তিনি জানান, ৬/৭ মাস পূর্বে ছনু মন্ডলের পুত্র রায়গ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য তৈয়ব আলী জমিটি তার বলে দাবি করেন। তিনি জোর করে জমিতে যাবার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যে মামলা বর্তমানে চলমান। তিনি বলেন মামলা করেই তৈয়ব আলী জমিতে থাকা গাছ কাটার চেষ্টা করেছিলেন। তারা বিষয়টি আদালতকে অবহিত করলে আদালত জমিতে উভয় পক্ষকে যেতে নিশেধ করে আদেশ দেন। তারপরও গাছ কাটতে গেলে তারা বাঁধা দেন। সে সময় কালীগঞ্জ থানায় বসে একটি আপস হয়। কেউ জমিতে যাবে না বলে মুচলেকা দেন। তারপরও সোমবার দুপুরে তৈয়ব আলী ওই জমি থেকে গাছ কাটতে যান। সে সময় মসজিদের ইমাম মোশারফ হোসেন বাঁধা দিতে গেলে তাকে মারপিট করা হয়েছে। যা নিয়ে তারা স্থানীয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ব্যাপারে গতকাল তৈয়ব আলীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। আর কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(জেআরটি/পি/জানুয়ারি ১৭, ২০১৫)