কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়া জেলার সর্বত্র তীব্র শীত ও শৈত্য প্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। দিনের অধিকাংশ সময় ঘন কুয়াশার চাদরে আচ্ছন্ন থাকায় কর্মজীবি সাধারণ মানুষ হয়ে পড়েছে কর্ম বিমুখ।

সোমবার সকাল থেকে দিনভর সূর্যের দেখা মিলেনি। ছিন্নমুল অসহায় দরিদ্র মানুষকে খড় কুটো জ্বেলে শীত নিবারনের চেষ্টায় ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। আবার চায়ের দোকোনে গিয়ে চা পিপাসুদের একটু উষ্ণতা নিতে দেখা গেছে।

শীত ও শৈত্য প্রবাহের কারনে কর্মস্থলগুলোতেও উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে। কাজের চাপ বেশী না থাকলে সাধারন মানুষকে ঘর থেকে বের হতে দেখা যায়নি। তীব্র শীত ও শৈত্য প্রবাহের ফলে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে বলে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র সূত্র জানা গেছে। এদিকে তীব্র শীত জেঁকে বসায় অসহায় ছিন্নমুল সাধারন ও দরিদ্র মানুষের মাঝে সরকারীভবে শীতবস্ত্র কম্বল বিতরন করা হয়েছে তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে ভূক্তভোগীরা জানিয়েছে।

কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার প্রামানিক জানান, এ জেলায় শীত জনিত কারণে ফসলের কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা নেই। ক্রমাগত শীতে ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু থেমে থেমে শীতের প্রকোপ বাড়ার কারণে সেটা হচ্ছে না।

এদিকে কনকনে শীতে বাজার-ঘাট প্রায় জনশুন্য হয়ে পড়ছে। বাজারের পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলোতে শীতবস্ত্র কেনার জন্য নিম্ন আয়ের ও ছিন্নমূল মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঘন কুয়াশায় দুর্ঘটনা এড়াতে জেলার প্রধান সড়কগুলোতে ট্রাক, নছিমন, করিমন গাড়ি দিনের বেলায় হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের ডা. রতন কুমার পাল জানান, মৃদু শৈতপ্রবাহের কারণে হাসপাতালের আউট ডোরে প্রায় ৩১০ শিশু রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হাসপাতালে প্রতিদিন ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সেই সঙ্গে এ জেলার মানুষ মাথাব্যথা, শ্বাসনালীর প্রদাহ ও সর্দি-জ্বরসহ বিভিন্ন শীত জনিত রোগে ভুগছে।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন জানান, জেলার শীতার্ত মানুষের মধ্যে ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে আট হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে এবং আরো ১০ হাজার কম্বলের চাহিদা সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে।

(কেকে/এএস/জানুয়ারি ১৯, ২০১৫)