কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : প্রকাশ্যে দিবালোকে হাসপাতালের ডাক্তারের চেম্বার ভাংচুরের পর হাসপাতালের অভ্যন্তরে সিগারেট খেতে নিষেধ করায় মারধর করে সিগারেট দিয়ে হাতে ছ্যাকা দেয়া হয়েছে কর্মচারী জাফর (৩০)কে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া হাসপাতালে ররিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটান হাসপাতালের নার্স আনজুমানআরার স্বামী মো.হারুন। এ সময় গোটা হাসপাতালে রোগীদের মধ্যে এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তারসহ অন্য কর্মচারীরাও হারুন না থামাতে পারেনি। খবর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক ডা.আব্দুর রহিমের সামনে ও তার চেম্বারে বসে এ ঘটনা ঘটলেও এ ঘটনায় তিনি কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় হাসপাতালের অন্য কর্মচারীরা এখন শংকিত।

জানাযায়, গতকাল বিকালে হাসপাতালে অভ্যন্তরে সিগারেট টানা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসকের অফিস সহকারী জাফরের সাথে মো. হারুনের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জাফরের হাতে সিগারেটের ছ্যাকা দেয় হারুন। এ ঘটনায় দু’জনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হৈ-হুল্লোড় শুরু নিয়ে গোটা হাসপাতালে হুলুস্থুল শুরু হয়। তাৎক্ষনিক হাসপাতালের একাধিক ডাক্তার ও কর্মচারী পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও হারুনের অকাথ্য গালাগাল ও হুমকিতে সবাই পিছু হটেন। খর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক ও কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, হারুনের কারনে হাসপাতালে সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। মুলত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাও তাকে ভয় পায়। এছাড়া এর আগেও স্বাস্থ্য প্রশাসকের কক্ষে বসে গালাগালি করে হারুন। ভাংচুর করে এক ডাক্তারের চেম্বার। ওই সময় আইনী ব্যবস্থা না নেয়ায় এখন সে হাসপাতালে অভ্যন্তরে যখন যা খুশি করে বেড়াচ্ছে।

একাধিক রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতালের কর্মচারীদের মারধর করতে দেখে অনেক রোগী ভয়ে রাস্তায় বের হয়ে যায়। সবচেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে হার্টের রোগীরা। জানাযায়, কলাপাড়া হাসপাতালের নার্স আনজুমানআরা কে ২০১১ সালের ২ মার্চ পটুয়াখালীর তৎকালীন সিভিল সার্জন এক গোপন প্রতিবেদনে (স্মারক নং সিএস/পটুয়া/২০১১/গোপনীয়/৪৫২) পটুয়াখালী জেলা থেকে অন্যত্র বদলীর সুপারিশ করে সেবা পরিদপ্তর’র উপ সচিব ও পরিচালক(অতিরিক্ত দায়িত্ব) বরাবর চিঠি পাঠান। চিঠিতে উল্লেখ করেন ১৯৯৯ সাল থেকে সিনিয়র ষ্টাফ নার্স পদে আনজুমানআরা কর্মরত আছেন। কিন্তু তার স্বামী মো. হারুন সরকারি কর্মচারী না হওয়া সত্বেও সরকারি কাজে বাধার সৃষ্টি করে হাসপাতালের অভ্যন্তরীন পরিবেশ নষ্ট করছেন। তৎকালীন উপজেলা পঃপঃ কর্মকর্তা তার কাছে এ ণিখিত অভিযোগ করেছেন বলেন তৎকালীন পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. জিতেন্দ্র চন্দ্র রায় এ চিঠি পাঠান। কিন্তু এখনও বহাল তবিয়তে তারা দু’জনেই।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহায়ক মো. জাফর জানায়, সে এক শিশু রোগীর সাথে কথা বলছিল, এ সময় হারুন তার হাতে জলন্ত সিগারেট দ্বারা ছ্যাকা দেয়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হারুন তার পুরুষাঙ্গ লক্ষ্য করে লাথিমারে। এতে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে । এ ব্যাপারে মো. হারুন জানায়, সে কাউকে মারধর কিংবা সিগারেটের ছ্যাকা দেয়নি। এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রহিমকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে কিছু বলবেন না বলে জানান। তবে অন্য পত্রিকার সাংবাদিকদের কাছে বলেন, তিনি ঘটনা নিরসন করছেন।

পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো.মজিবুল হক জানান, ঘটনাটি জেনে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এমকেআর/পি/জানুয়ারি ১৯, ২০১৫)