স্টাফ রিপোর্টার : হরতাল সফল করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক বিবৃতিতে বলেন, গত বছরের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন পূর্বাপর বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বাসা থেকে কিংবা অন্য কোনো জায়গা থেকে ধরে নিয়ে চিরদিনের জন্য গায়েব অথবা কয়েকদিন পর তার ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে থাকার মতোই বর্তমান চলমান আন্দোলনে আবার সেটারই পূণরাবৃত্তি দেখা যাচ্ছে।

বুধবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি দলের বেপরোয়া ক্যাডারদের ভয়াল তাণ্ডবে দেশবাসী বিমূঢ়, হতভম্ব ও আতঙ্কিত। অবৈধ ক্ষমতাসীনদের বন্য প্রতিহিংসার এমন ভয়াবহ চিত্র অন্য কোনো দেশে বিরাজমান আছে কি-না সন্দেহ। বিরোধী দলের আন্দোলন ঠেকাতে আবারও তাদের হত্যার নেশায় পেয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো আবারও কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে আন্দোলনরত বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করছে। এরই মধ্যে দশের অধিক বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যার সংবাদ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।

বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি করছে পুলিশ-র‌্যাব, যাকেই পাওয়া যাচ্ছে তাকেই সেখান থেকে তুলে নিয়ে হয়তো বা সেখানেই অথবা অন্য কোনো অজ্ঞাত স্থানে গুলি করে হত্যা করার পর লাশ উদ্ধার দেখাচ্ছে।

বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত পরশু রাতে রাজধানীতে সরকারের গোয়েন্দা রাহিনী ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামান জনিকে তার মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেন। এছাড়াও নড়াইল পৌর কমিশনারের লাশ ঢাকায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। শুধু বিরোধী দলের আন্দোলনকে দমানোর জন্য সরকারি বাহিনীকে গুলিকে মানবতাবিরোধী গুম, গুপ্তহত্যার অবাধ লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এই অবৈধ সরকার দেশকে হত্যা ও লাশের মহামারীর দেশে পরিণত করার জন্য পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করছে।

তিনি বলেন, এই ভোটারবিহীন সরকার এজেন্টদের দিয়ে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নাশকতা সৃষ্টি করে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপাতে হরদম মিডিয়াতে প্রচার চালাচ্ছে। অধিকাংশ গণমাধ্যমকে ভয় দেখিয়ে কব্জা করে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কুৎসা আর অপপ্রচারের ধুম চালানো হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগ যা বলে এবং প্রচার চালায় ঠিক তার উল্টোটাই জনগণ বিশ্বাস করেন।

রিজভী আহমেদ বলেন, সুতরাং জনগণের দাবি হচ্ছে, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ঘোষণা করা। বর্তমান সংকট নিরসন করতে হলে সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।

রিজভী বলেন, চলমান অবরোধের পাশাপাশি র‌্যাব-পুলিশের কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদেরকে হত্যা, গুপ্তহত্যা ও বিভৎস দলন-পীড়ণের প্রতিবাদে বুধবার থেকে শুরু হওয়া ঢাকা মহানগরীসহ ঢাকা বিভাগ ও খুলনা বিভাগে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল সফল করার জন্য ২০ দলীয় জোটের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও দেশের সর্বস্তরের জনগণকে আহবান জানাচ্ছি।

(ওএস/এটিআর/জানুয়ারি ২১, ২০১৫)