কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : আগামীকাল পঁচিশে বৈশাখ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৩তম জন্মজয়ন্তী। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনব্যাপী রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপনে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় তিনদিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইসলামী বিশ্বদ্যিালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম রাহাতুল ইসলাম।
স্মারক বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল আহসান চৌধুরী। রবীন্দ্রনাথের জীবনাদর্শন ও তার কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা করবেন কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহা. জমির উদ্দীন, বোধোদয়ের সভাপতি অ্যাডভোকেট লালিম হক।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন।
দুপুর ২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী আখতার হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, কুষ্টিয়ার জেলা পরিষদের প্রশাসক আলহাজ্ব জাহিদ হোসেন জাফর, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বদরুদ্দোজা।
স্মারক বক্তব্য দেবেন কবি ও সাহিত্যিক আলম আরা জুঁই। আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিলাইদহ রবীন্দ্র সংসদের পরিচালক এসএম আফজাল হোসেন, লেখক ও কলামিস্ট শেখ গিয়াস উদ্দীন আহমেদ মিন্টু। সভাপতিত্ব করবেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন।
শনিবার সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী। স্মারক বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক রফিকুর রশীদ। আলোচক হিসেবে আলোচনা করবেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরোয়ার মুর্শেদ। সভাপতিত্ব করবেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন।
বিস্ময়কর প্রতিভায় নিজেকে কবিগুরু থেকে বিশ্বকবিতে পরিণত করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাঙালির চিন্তা-ভাবনা ও অনুভূতির এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে কবিগুরুর সৃষ্টিশীলতার ছোঁয়া পড়েনি। অসাম্প্রদায়িক ও সর্বজনীন সমাজ ব্যবস্থার রূপকার রবীন্দ্রনাথ আজও বাঙালিকে সঠিক পথের নিশানা দেখায়। রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতা ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত বিরাট প্রেরণার উৎস ছিল।
বিশ্ব কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুরুষরা নাটোরের জমিদার পরিবারের কাছ থেকে শিলাইদহের জমিদারি কিনে নিয়েছিলেন। জমিদারি পরিচালনার জন্য রবীন্দ্রনাথ যুবক বয়সেই এই শিলাইদহের নীলকুঠিতে আসেন। পদ্মার ভাঙনে কুঠি ভবনটি বিধ্বস্ত হলে ১৮৯২ সালে ১৩ বিঘা জমির উপর বিস্তৃত ৬ বিঘা জমি পাঁচিল দিয়ে ঘেরাও করেন। রবীন্দ্রনাথ এখানে বসেই কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, গান রচনা করতেন। জমিদারি পরিচালনার জন্য তিনি দীর্ঘকাল এখানে কাটান।
‘গীতাঞ্জলী’ কাব্যের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পান। তার অধিকাংশই তিনি এই কুঠিবাড়িতে বসে রচনা করেছিলেন। এ মহান কবি ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট মৃত্যুবরণ করলে সরকার ওই জায়গা সংরক্ষিত ঘোষণা করেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিলাইদহের কুঠিবাড়ী সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। রাস্তা-ঘাট পরিষ্কার, নতুন রঙে রঙিন করা স্টেইজ, গেট ও প্যান্ডেলের জায়গা বাড়ানোসহ বিভিন্ন কাজ সমাপ্ত করেছে রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটি।
তিন দিনের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে বিশ্বকবিকে নিয়ে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক ও নাট্যানুষ্ঠান এবং আবহমান কালের ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ মেলা। জেলার বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীরা নাটক, নৃত্য ও রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করবেন।
(কেকে/এএস/মে ০৭, ২০১৪)