শেরপুর প্রতিনিধি : বাংলাদেশে শিশু, কিশোরী ও মায়েদের মধ্যে অপুষ্টির হার বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক বেশি। দেশের মোট জনগোষ্ঠির তিন কোটি ৬০ লাখ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। ৫ বছর বয়সের কম বয়সী যত শিশু মারা যায়, তাদের তিন ভাগের এক ভাগই মারা যায় অপুষ্টির কারণে।

প্রতি ১০ জন সন্তান ধারণে সক্ষম মহিলার মধ্যে ৩ জন মহিলা অপুষ্টিতে ভুগছে। গবেষণায় দেখা গেছে, অপুষ্টির কারণে বাংলাদেশে ৩৬ শতাংশ শিশু স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। আর ৪১ শতাংশ শিশু বেড়ে ওঠে খর্বকায় বা বিকলাঙ্গ হয়ে। মোট ১৬ শতাংশ শিশু উচ্চতার তুলনায় স্বাস্থ্য কম এবং ৩৩ শতাংশ শিশুরা রক্তস্বল্পতায় ভুগছে। শেরপুরে ২১ জানুয়ারি বুধবার ‘স্কেলিং আপ নিউট্রেশন’ সংক্রান্ত জেলা পর্যায়ের এক কর্মশালায় মুল প্রবন্ধে এমন তথ্য জানানো হয়।

কর্মশালায় একই সাথে শিশুর সুস্থ্য সবলভাবে বেড়ে ওঠার জন্য মায়ের গর্ভে আসার দিন থেকে তার বয়স ২ বছর পর্যন্ত ১০০০ দিনকে গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই ১০০০ হাজার দিনে শিশুর বুদ্ধি অর্থাৎ তার ব্রেন সেল ও শরীর ঠিকভাবে বাড়ার জন্য পুষ্টির প্রয়োজন। এ সময়ে পুষ্টির অভাবে শিশুর যে ক্ষতি হয় তা আর কখনও পুরণ হয়না। তাই এই ১০০০ হাজার দিনের সবগুলো সুফল নিশ্চিত করতে প্রয়োজন গর্ভবতী মায়ের সঠিক পুষ্টি, শিশুর জন্মের এক ঘন্টার মধ্যে মায়ের দুধ খাওয়ানো, শিশুর বয়স ৬ মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো এবং ৬ মাস বয়সের পর থেকে ২ বছর বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধের পাশপাশি বয়স অনুযায়ী পরিপুরক পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো। এ বিষয়ে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।

পুষ্টি আন্দোলনের নাগরিক জোট সিএসএ ফর সান-এর সহায়তায় সেবা পরিষদ এ কর্মশালার আয়োজন করে। শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ছানুয়ার হোসেন ছানু প্রধান অতিথি এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হায়দর আলী বিশেষ অতিথি ছিলেন। সদর ইউএনও মো. হাবীবুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে সেবা পরিষদের নির্বাহী পরিচালক জয়নাল আবেদীন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বায়েযিদ হাসান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সাংবাদিক হাকিম বাবুল এতে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। কর্মশালায় স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবার পরিকল্পনা, জনস্বাস্থ্য, সমাজসেবা, প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা ছাড়াও শিশুস্বাস্থ্য ও পুষ্টি উন্নয়নে কাজ করা বিভিন্ন বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সুধীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

(এইচবি/এএস/জানুয়ারি ২১, ২০১৫)