বিনোদন ডেস্ক : আজ নায়করাজ রাজ্জাকের জন্মদিন । দেশীয় চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি এ মানুষটি আজ ৭৪ বছরে পা রেখেছেন। ১৯৪২ সালের এই দিনে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন করতে তিনি কলকাতা থেকে বুধবার দুপুরে ঢাকায় ফিরেছেন।

জন্মদিনকে ঘিরে নায়করাজ রাজ্জাক বলেন, সবমিলিয়ে আল্লাহর রহমতে এই মুহূর্তে শারীরিকভাবে বেশ ভাল আছি, আলহামদুলিল্লাহ। সবাই দোয়া করবেন যেন সবসময় সুস্থ থাকতে পারি, ভাল থাকতে পারি। জন্মদিনে আমার ভক্ত দর্শক, সহকর্মী সর্বোপরি চলচ্চিত্র পরিবারের সবার কাছে আমি দোয়া চাই। সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

নায়করাজ রাজ্জাক সর্বশেষ তার বড় ছেলে নায়ক বাপ্পারাজের নির্দেশনায় ‘কার্তুজ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এই চলচ্চিত্রে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রয়াত পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামও অভিনয় করেছিলেন। চাষী নজরুল ইসলামের প্রথম চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’-এও রাজ্জাক অভিনয় করেছিলেন। অন্যদিকে নায়করাজ সর্বশেষ ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ‘আয়না কাহিনী’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছিলেন। এই চলচ্চিত্রে জুটি হিসেবে অভিনয় করেছিলেন সম্রাট ও কেয়া। এরপর আর নতুন কোন চলচ্চিত্র নির্মাণে তাকে দেখা যায়নি।

নায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রে নায়করাজের যাত্রা শুরু হয় জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে। এতে তার বিপরীতে ছিলেন কোহিনূর আক্তার সুচন্দা। প্রযোজক হিসেবে নায়করাজের যাত্রা শুরু ‘রংবাজ’ ছবিটি প্রযোজনার মধ্য দিয়ে। এটি পরিচালনা করেছিলেন জহিরুল হক। রাজ্জাকের বিপরীতে ছিলেন কবরী। ববিতার সঙ্গে জুটি বেঁধে নায়করাজ প্রথম নির্দেশনায় আসেন ‘অনন্ত প্রেম’ চলচ্চিত্র দিয়ে। এই ছবিটি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে আছে। নায়ক হিসেবে এ অভিনেতার সর্বশেষ চলচ্চিত্র ছিলো শফিকুর রহমান পরিচালিত ‘মালামতি’। এতে তার বিপরীতে ছিলেন নূতন। গুণী ও খ্যাতিমান এ শিল্পীর জন্মদিনে জাগোনিউজ- এর পক্ষ থেকে রইলো শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

এক নজরে নায়করাজ

জন্ম : ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি।
পুরো নাম : আবদুর রাজ্জাক।
বাবা : আকবর হোসেন।
মা : নেসারুন্নেসা।
স্ত্রী : খায়রুন্নেসা (ভালোবেসে নায়করাজ লক্ষ্মী বলে ডাকেন)।
সন্তান : তিন ছেলে ও দুই মেয়ে।
নাতি-নাতনির সংখ্যা : আটজন।
অভিনয়ের শুরু : সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময়।
অভিনয়ে যাকে গুরু মানেন: পীযুষ বোস।
অভিনয়ে পারিবারিক সমর্থন : মেজ ভাই আবদুল গফুর।
চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততা : আবদুল জব্বার খানের সঙ্গে উজালা চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হিসেবে।

নায়ক হিসেবে প্রথম চলচ্চিত্র : জহির রায়হানের `বেহুলা`।
প্রথম নায়িকা : কোহিনূর আক্তার সুচন্দা।
জুটি হিসেবে জনপ্রিয়তা : কবরীর সঙ্গে। প্রথম চলচ্চিত্র সুভাষ দত্তের `আবির্ভাব`।
নায়ক হিসেবে অভিনয় : ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। নায়ক হিসেবে শেষ চলচ্চিত্র `মালামতি`। বিপরীতে নূতন।

চরিত্রাভিনেতা হিসেবে অভিনয় : ১৯৯৫ সাল থেকে।
প্রথম প্রযোজিত চলচ্চিত্র : রংবাজ (রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন্স), পরিচালক জহিরুল হক। বিপরীতে কবরী।
প্রযোজনায় বিরতি : ২০০০ সালে `মরণ নিয়ে খেলা` চলচ্চিত্রটি নির্মাণের পর ব্যবসায়িক ক্ষতির কারণে।
প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র : `অনন্ত প্রেম` (১৯৭৭), বিপরীতে ববিতা।
প্রযোজনায় ফিরে আসা : ২০০৮ সালে `আমি বাঁচতে চাই`। নায়ক হিসেবে ছোট ছেলে সম্রাটের অভিষেক।
সর্বশেষ পরিচালিত চলচ্চিত্র : `আয়না কাহিনী` (২০১৪)।
সর্বশেষ অভিনীত চলচ্চিত্র (এখন পর্যন্ত) : বাপ্পারাজ পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র `কার্তুজ`।
নায়ক হিসেবে যাদের বিপরীতে কাজ করেছেন : সুচন্দা, কবরী, শবনম, শাবানা, নাসিমা খান, সুজাতা, ববিতা, কবিতা, নূতন, অঞ্জনা, কাজরীসহ আরও অনেকে।
জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি : বাংলাদেশের মানুষের অপরিসীম ভালোবাসা ও বন্ধু সাংবাদিক প্রয়াত আহমদ জামান চৌধুরীর লিখনীর মধ্যদিয়ে নায়করাজ উপাধি অর্জন।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ২৩, ২০১৫)