বাগেরহাট প্রতিনিধি : 'পেটের টানে রিকশা চালাই। বাড়িতে অসুস্থ মা। বউ-বাচ্চা আছে। পরিবার টানতি হয়। কাজ না করলি খাব কি। আর কাজ করতি হলি তো আগে বাঁচাতি হবে। তাই এক ভাইয়ার কাছ থেকে চাইয়ে হেলম্টে মাথায় দিয়ে রিকশা চালাচ্ছি। প্রেট্রোল বোম মারলি চোখ-মুখ তো বাঁচবে।..’ রিকশা চালক ফকরুল কথা গুলো বলছিলেন। বাগেরহাটের হরিণখানা এলাকায় তার সাথে দেখা। জামায়াত-বিএনপির টানা অবরোধের নামে নাশকতা, বোমাবাজি, সহিংসতার মধ্যে তাকে জীবিকার প্রয়োজনে রিকশা চালাতে হচ্ছে। তবে আর দশজনের মত তিনিও আতঙ্কিত। তাই তো নিজেকে রক্ষার চেষ্টা হিসেবে হেলম্টে মাথায় দিয়ে রিকশা চালনো।

দেশ জুড়ে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতায় আতঙ্ক কাটছে না জনমনে। শঙ্কিত মানুষ যে যার মত নিজেকে রক্ষার নানা প্রকার চেষ্টা করছে। রিকশা চালক যুবক ফকরুলের এমন চেষ্টায় কিশোর, তরুনেরা কোতুহল বোধ করে। বয়স্কদেরও দৃষ্টি কাড়ে। টানা অবরোধের প্রভাব পড়ছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবনযাপনে। ক্ষমতায় যাবার দ্বন্ধে খেটে খাওয়া প্রান্তিক মানুষগুলো পড়েছে চরম বিপাকে।

বেচেঁ থাকতে হলে উপার্জন চাই। কারণ উপার্জন না হলে দু’বেলা আহার জোটেনা তাদের। তাই তো নাশকতা কিংবা নানা শঙ্কা থাকলেও জীবনের প্রয়োজনে পথে না বেরিয়ে উপায় নেই তাদের। পথে বেরোলেই পেট্রল বোমা, ককটেল কিংবা হামলার শিকার হবার ভয় থেকে রক্ষা নেই কারোই। কিন্তু এমন ভয় নিয়ে ঘরে বসে থাকারও উপায় নেই হতদরিদ্রদের। বেঁচে থাকাতে, উপার্জনের প্রয়োজনে পথে বের হতেই হয়। ফকরুলদের একদিন উপার্জন না হলে হাঁড়ি চড়ে না। ফকরুল জানায়, তার ৭ সদস্যের পরিবার। অসুস্থ বৃদ্ধা মায়ের চিকিৎসার খরচও তাকেই বহন করতে হয় এই রিকশা চালিয়ে। তাইতো চলমান পরিস্থিতিতে নিজের নিরাপত্তা আর অবরোধ হরতালকারীদের হামলা থেকে বাঁচতে মাথায় হেলমেট পরেই রিকশা চালাচ্ছেন তিনি। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অবরোধ-হরতালের সহিংসতার বিষয় ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন,‘ক্ষমতার জন্নি পোড়াইয়ে মানুষ মারতিছে। এসব ভাল না। আমরা বাঁচতি চাই।’

(একে/পি/জানুয়ারি ২৪, ২০১৫)