আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকহানারদের সাথে একাধিক সম্মুখ যুদ্ধে বীরত্বের ভূমিকা পালনকারী এম.এ রব স্বাধীনতার ৪৩বছর পরে আজো অপরের বাড়িতে আশ্রিত হিসেবে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন।

বঙ্গবন্ধু প্রেমিক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ রব জানান, একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাকে পূর্ণবাসনের জন্য এগিয়ে আসলেও তিনি তা প্রত্যাখান করেছেন। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া সহযোগীতা ছাড়া কোন কিছুই গ্রহণ করবেন না বলে ওইসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। একান্ত আলাপকালে মুক্তিযোদ্ধা ও আনসার কমান্ডার এম.এ রব বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের উত্তাল মুহুর্তে (২১ অক্টোবর সন্ধ্যায়) গৌরনদীর বাটাজোর নামকস্থানে এ্যাম্বুসে থাকা পানহানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধা নিজাম বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়।

সারারাত ওই যুদ্ধের পর ভোরে যুদ্ধস্থানে যাওয়ার পরে দেখতে পাই সাতজন পাকসেনা রাতের যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। রাতের যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে ভোরে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় গভীর জঙ্গল থেকে অস্ত্রবিহীন তিনজন পাক সেনা সুবেদার শরীফ খান বেলুচী, সিপাহী নাসির খান বিহারী ও সিপাহী ফিরোজ খানকে (পাঞ্জাবী) আমি হাতেনাতে আটক করেছিলাম। পরে তাদের (পাক সেনাদের) স্বীকারোক্তি মতে বাটাজোর সিএন্ডবি রোডের সন্নিকট থেকে তিনটি ব্যাটাগান ও কিছু গুলি উদ্ধার করেছিলাম।

তিনি আরো বলেন, আনসার বাহিনীর একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরবর্তী সময় থেকে শেষপর্যন্ত আমি নয়টিস্থানে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। আবেগআপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, জীবন বাঁজি রেখে সেদিন পাকসেনাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধ করে বিজয় পতাকা ছিনিয়ে আনলেও স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও আজো আমি রয়েছি অন্যের ঘরে আশ্রিত। ধানডোবা গ্রামের তার মামা মৃত হারেজ মোল্লার বসত ঘরের একটি বারান্দায় ৫ সদস্যর পরিবার পরিজন নিয়ে তিনি বসবাস করছেন।

(টিবি/এএস/জানুয়ারি ২৫, ২০১৫)