ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলাতে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশী আলুর চাষ হয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক সংঘাত এবং চলমান হরতাল অবরোধে আলু’র ভরা মৌসুমের আগেই দাম নিুমুখী হওয়ার কারণে আলু চাষীদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। উপজেলাতে যদিও কিছু সংখ্যক চাষী ইতি মধ্যেই ভাল দামের আশায় আগে ভাগে আলু তুলে বাজারে বিক্রি করেছে। তাতেও তারা আশানুরুপ দাম পায়নি। ফলে তারা আলু তোলা বন্ধ করে দিয়েছে আলু পরিপক্ক করার জন্য।

এই পরিপক্ক আলু আর কয়েক দিন পর থেকে উঠা শুরু হবে। সোমবার কোটচাঁদপুর উপজেলা জয়দিয়া গ্রামের মাঠে যেয়ে দেখা যায় আলু পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষীরা । আলুচাষী জয়দিয়া গ্রামের ইসমাইল হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, এবার আলু’র ফলন ভাল হলেও আমরা দুঃচিন্তার মধ্যে রয়েছি। আর কয়েক দিন পর থেকে পরিপক্ক আলু উঠা শুরু হবে। বর্তমান রাজনৈতিক সংঘাত এবং চলমান হরতাল অবরোধে আলু বাইরে না গেলে আলুর দাম পাওয়া যাবে না। এখানকার অধিকাংশ আলু চাষী দায়দেনা থাকায় আলু তুলে কোল্ডষ্টোরে সংরক্ষণ করতে পারেনা । আলু তুলেই আমাদেরকে দায়দেনা ঠেকাতে বিক্রি করতে হয়। আলু চাষে ভীষণ প্ররিশ্রম করতে হয়। আলু বীজ বোপন থেকে শুরু করে আলু পরিপক্ক করে উঠানো পর্যন্ত ৩ মাস সময় লাগে। তিন মাসের এ আবাদে বিঘা প্রতি ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। এখন আমাদের কপালে কি আছে তা জানিনা। আলু চাষী অধির হালদার কালু বলেন, আমাদের মধ্যে অধিকাংশ আলু চাষী বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে এ চাষে নেমেছে। বর্তমান দেশের রাজনৈতিক হানাহানি কারণে আলু’র দাম আশানূরুপ পাব কিনা বা লোনের টাকা শোধ হবে কিনা এ নিয়ে আমাদের ভাবীয়ে তুলেছে। এবার বেশীর ভাগ আলুর চাষ হয়েছে, জয়দিয়া, লক্ষিকুন্ডু, হরিন্দিয়া, মামুনসিয়া সাফদালপুর, লক্ষিপুর, দোড়া, কাগমারী, বলুহরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায়। কোটচাঁদপুর শহরের কাঁচা মাল ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম ও জয়দিয়া গ্রামের কাচাঁমাল ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, বর্তমানে আড়তে ৪শ’২০ থেকে ৪শ’৫০ টাকা প্রতি মণ দরে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই আলুর দাম কমে আসছে। আলু উঠার মুখেই এ অবস্থা হলে আলু চাষীরা পুজিঁ হারিয়ে পথে বসবে। উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ডিএম শফিউদ্দীন বলেন, এবার কোটচাঁদপুর উপজেলাতে লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশী আলুর চাষ হয়েছে। ১শ’১৫হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হলেও আলু’র চাষ হয়েছে ১শ’৮০হেক্টর জমিতে। তিনি বলেন, এবার আলুতে রোগবালাই কম সে কারণে আলু’র ফলন মোটামুটি ভাল হবে। তবে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিরাজমান থাকলে আলু বাইরে যেতে না পারলে কৃষকদের আলুর দাম পাওয়া, না পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

(জেআরটি/পি/জানুয়ারি ২৬, ২০১৫)