লোহাগড়া(নড়াইল) প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার আমাদা আদর্শ কলেজ চত্বরে ঐতিহ্যবাহী পিঠাউৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদা আদর্শ কলেজের আয়োজনে শনিবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় পিঠাউৎসবের উদ্বোধন করেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হাফিজুর রহমান। কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শিকদার আব্দুল হান্নান রুনুর সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন কলেজ অধ্যক্ষ আল ফয়সাল খান লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম ভূঁইয়া, লোহাগড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুর রহমান, নড়াইল প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ ও প্রভাষক রূপক মুখার্জি প্রমুখ। সভা শেষে প্রধান অতিথি ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিক ভাবে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন।

দৃষ্টিনন্দন নকশা আর ভিন্ন স্বাদের পিঠাপুলির আয়োজনে কলেজ প্রাঙ্গণ উৎসবমুখর হয়ে উঠে। হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় এই পিঠাউৎসব। চিতই পিঠা, কুলি পিঠা, ভাপা পিঠা, দুধকুলি, ধুপি পিঠা, হাত আনদোসা, রসপাকান, খড়েপাকান, ফুলপাকান, পদ্মপাকান, ঝুনঝুনিপাকান, ভাজা পিঠা, তকতি পিঠা, নকশা পিঠা, সিরিঞ্জ পিঠা, জজি পিঠা, আদিপাকান, আপেল পিঠা, নাড়– পিঠা, খেজুর পিঠা, দুধরুটি, লাভ পিঠা, ডিম পিঠা, নারকেলের চিড়া, দুধচিতই, পাতা পিঠা, ফুল পিঠা, ত্রিভুজ পিঠা, গোপাল পিঠা, তারা পিঠা, পাটিসাপ্টা, পুলি পিঠা, দুধপুলি, জিলাপি পিঠা, ধুনেপাতা চিতই, গোলাপ পিঠা, সেমাই পিঠাসহ অর্ধশতাধিক পিঠার সমারোহে ভরে উঠে প্রতিটি স্টল। শুধু পিঠার স্বাদ আর নকশারই বৈচিত্র্য নয়, স্টলের নামের ক্ষেত্রেও ছিল ভিন্নতা। কলেজশিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ, পুতুল, ফাতেমা, তানিয়া, রিপন, রাজিব, সারমিন জানান, আমাদের পিঠা উৎসবকে আরো প্রাণবন্ত করতে স্টলের নামের ক্ষেত্রে রয়েছে ভিন্নতা। ‘সোনালি সকাল’, ‘হয়তো এইদিন তোমারই জন্য’, ‘মনে পড়ে তোমাকে’, ‘আমাদের কলেজে আমরাই সেরা’, ‘স্মৃতি বিজড়িত এইদিন’, ‘স্মৃতিমাখা এই উৎসব’সহ বিভিন্ন নামে স্টলগুলোতে পিঠার পসরা সাজানো হয়। শিক্ষার্থী জাকিয়া তাজিন অন্তর বলেন, ‘আবহমান বাংলার ঐহিত্য সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পিঠাউৎসবের এই আয়োজন। আফসানা মিমি অন্তরা বলেন, ‘আজকের দিনটি একেবারে অন্যরকম। অনেক আনন্দের, হাজারো মানুষের মিলনমেলার দিন এটি।’ দিনব্যাপী এই পিঠাউৎসবের আয়োজনে প্রতিটি স্টলে স্টলে দর্শনার্থীদের ব্যাপক ভিড় ছিল। শিশু-কিশোর, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অতিথি থেকে শুরু করে নানা বয়সী মানুষ নিয়েছেন ভিন্ন ভিন্ন পিঠার স্বাদ। হারিয়ে যাওয়া অনেক পিঠার আয়োজন ছিল এই পিঠাউৎসবে। আমাদা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আল ফয়সাল খান বলেন, ‘আগের দিনে গ্রামগঞ্জে হরেক রকম পিঠা তৈরি হতো। যান্ত্রিকতার যাতাকলে অবাহমান বাঙলা থেকে পিঠার আয়োজন কিছুট হলেও কমে গেছে। বিশেষ করে এ প্রজন্মের কাছে পিঠার আদি ঐহিত্য ছড়িয়ে দিতে পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছি। আগামিতেও আমাদের এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে।

(ওএস/পি/জানুয়ারি ৩১, ২০১৫)