নাটোর প্রতিনিধি  : আখ স্বল্পতার কারণে নির্ধারিত সময়ের এক মাসে আগেই গত সোমবার নাটোর চিনি কলের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চলতি মৌসুমে চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না বলে জানিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ।

প্রায় ২৪ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত রেখেই গত ২৮ নভেম্বর থেকে এই চিনিকলে উৎপাদন শুরু হয়।
নাটোর সুগার মিল সুত্রে জানাযায়, চলতি মৌসুমে ১১০ কর্ম দিবসে ১ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক আখ মাড়াই করে ১১ হাজার ৮’শ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়। চিনি আহরণের হার ধরা হয় ৭ দশমিক ৬০ ভাগ। পরে আখের স্বল্পতার কথা বিবেচনা করে মিল কর্তৃপক্ষ ৯০ কর্মদিবসে ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে প্রায় ৯ হাজার মেট্রিক চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করে। সেখানে ৬৭ কর্ম দিবসে ৯৫ হাজার ৪৬০ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৬ হাজার ৮৬৬ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হয়। চিনি আহরণ হয় ৭ দশমিক ০৩ ভাগ। মিলকর্তৃপক্ষ জানায়, গত মৌসুমে উৎপাদিত প্রায় ২৪ কোটি মূল্যের ৬ হাজার ৪’শ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রীত রেখেই চিনি কলে উৎপাদন শুরু হয়। তবে গত বছরের মজুদকৃত চিনিগুলো প্রায় ইতিমধ্যে বিক্রি করে কৃষকের বকেয়া পাওনাসহ চলতি মৌসুমের সরবরাহকৃত আখের মুল্য পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদা মাফিক আখ সরবরাহ না থাকায় মিলকর্তৃপক্ষ চিনি উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়। ফলে চলতি মৌসুমে একদিকে চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না, অপরদিকে এবারও মিলটিকে বিপুল পরিমান লোকসান গুনতে হবে। আগের মৌসুমেও মিলটিকে প্রায় ২২ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে।
নাটোর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম আরশাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মাঠে কোন আখ না থাকায় মিলে উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে। চিনির তুলনায় গুড়ের দাম পাওয়ায় কৃষকরা মিলে আখ সরবরাহ না করে গুড় তৈরীর প্রতি বেশি আগ্রহী হয়ে পড়ে। ফলে কৃষকরা অনেক আগেই আখ মাড়াই করে শেষ করে ফেলেছে। এই কারনে মিলে আখের স্বল্পতা দেখা দেয়। উৎপাদন খরচ বেশী হলেও প্রতিযোগীতার কারনে চিনির দাম কম হওয়ায় এবারও লোকসানের আশংকা রয়েছে।
(এমআর/পিবি/ফেব্রুয়ারি ২,২০১৫)