স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : বিদায়ী কোচ শেন জার্গেনসেন খুব দ্রুতই দেশে ফেরার ফ্লাইট ধরতে চাচ্ছেন। মা দিবসটা ব্রিসবেনে কাটাতে চান। সে জন্যই শুক্রবার ফ্লাইট ধরার তাড়া থাকলেও সে যাত্রা কিছুটা অনিশ্চিত, ‘মা দিবসের আগেই পরিবারের কাছে পৌঁছাতে চাই। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসে শুক্রবার মধ্যরাতে রওনা হলে শনিবার রাতের মধ্যেই ব্রিসবেন পৌঁছে যাব। কিন্তু টিকিট তো পাচ্ছি না। এখন অন্য এয়ারলাইনস দেখতে হবে।’

বিসিবি সভাপতির সঙ্গে আলাপে তার চলে যাওয়া চূড়ান্ত বলে জানিয়ে দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন যে এটা তার ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্ত। সেটারই বিস্তারিত জানতে চাওয়ায় বললেন, ‘ক্রিকেটীয় দিক থেকে আমি চাচ্ছিলাম কিন্তু হয়নি, এমন কিছু ব্যাপার অবশ্যই আছে। বিস্তারিত বলছি না। দলের চারপাশে ঘটে চলা নানা ঘটনায় আমার আরো কিছুটা নিয়ন্ত্রণ থাকলে ভালো হতো। আমি চেষ্টাও করেছি। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশে কিছু সীমাবদ্ধতা ও বিধিনিষেধ আছে।’ এসব সমস্যার কথা বিসিবিকে জানিয়েও কোনো ফায়দা হয়নি।

তাই বলে কোনো ‘ব্লেম গেম’ খেলায়ও ভীষণ অনীহা জার্গেনসেনের, ‘বিসিবিকে বলেছিলাম যে জিনিসটা আমি এভাবে না, ওভাবে চাচ্ছি। তবে আমার মনে হয় এখানে বাইরের কিছু ব্যাপারও ছিল যা আমার তো বটেই, বোর্ডেরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। ২০১৩ সালের শেষদিক থেকেই এমনটা হচ্ছিল। এ জন্যই বলছি যে কাউকে দোষারোপ করার কিছু নেই আসলে। টানা কয়েকটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় কিছু বলা বা করার মতো জায়গায় আমি ছিলাম না।’

ক্রিকেট উন্নয়নে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ঠিক পথেই আছে বলে তিনি মনে করেন কি না? বিদায়ী কোচ শেন জার্গেনসেনকে করা হয়েছিল প্রশ্নটা। একটু সময় নিয়ে সম্ভাব্য নিরাপদ জবাব সাজিয়েই তা ফেরি করলেন এই অস্ট্রেলিয়ান, ‘উন্নতির জন্য লেগে থাকা এবং একসঙ্গে কাজ করাটা খুব জরুরি। একাডেমি, ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে শুরু করে জাতীয় দল, প্রত্যেকটা জায়গায় উন্নতিটা হতে হবে ধারাবাহিক। সংশ্লিষ্ট সবারই একটা লক্ষ্য থাকতে হবে। যে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সবারই চেষ্টা থাকতে হবে। এবং সেই সঙ্গে থাকতে হবে কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতাও। আর ক্রিকেটটাকে রাখতে হবে সবার ওপরে।’

বিসিবির সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা চুকিয়ে নেওয়ার ব্যস্ততার মাঝেও সংবাদমাধ্যমকে দেদার সময় দেওয়া মিষ্টভাষী বিদায়ী কোচ শেন জার্গেনসেন নিজেকে সামলেই রেখেছেন। বিসিবি পরিচালকদের অনেকের অভিযোগ দলের ওপর কর্তৃত্ব বা নিয়ন্ত্রণ বলতে কিছুই ছিল না জার্গেনসেনের। বিশেষ করে শিষ্যদের ওপর কখনো কঠোর হতে পারেননি বলেও ‘বদনাম’ ছিল তার। এসব শুনেও বিদায়ী কোচের মুখে অমলিন হাসিটা ঠিক ঝুলে থাকল। জানালেন তার এ হাসিও এমন প্রচারণার একটি কারণ হয়ে থাকতে পারে, ‘আসলে এ প্রশ্নটা কখনোই শেষ হবে না। কারণ আমার মুখে সব সময়ই হাসি থাকে। শুধু এটুকুই বলব, কেবল মলাট দেখে একটি বইয়ের মূল্যায়ন করবেন না। বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক মানসিকতা আমার। আমার কোচিংয়ে দুটি সিরিজ জয় আছে বাংলাদেশের। দেশের বাইরে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ ড্র (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে) করে আসার ঘটনাও আছে। আছে ড্র টেস্ট সিরিজও। হ্যাঁ, টি-টোয়েন্টিতে উন্নতির দরকার আছে। এটা বাদ দিলে আর সব কিছুই আমার হয়ে কথা বলছে বলে মনে করি। এসব নিয়েই আমি চলে যাচ্ছি।’

(ওএস/পি/মে ০৮,২০১৪)