আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন, হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের বিচারের দায়িত্ব সরকারের। তবে ভবিষ্যতে যাতে হলমার্ক কেলেঙ্কারির মতো ঘটনা না ঘটে, সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং নজরদারি নিশ্চিত করতে বেশ কিছু পদ‌ক্ষেপ নিয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে লন্ডনে তাঁর সম্মানে আয়োজিত ভোজসভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

যুক্তরাজ্যে দ্য ব্যাংকার সাময়িকীর দেওয়া এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সেরা গভর্নরের পুরস্কার নিতে লন্ডনে যান গভর্নর ড. আতিউর রহমান। গতকাল দুপুরে হাউজ অব লর্ডসে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি এই পুরস্কার গ্রহণ করেন। রাতে তাঁর সম্মানে ওই ভোজ সভার আয়োজন করেন এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ইকবাল আহমদ।

ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা হলমার্ককে ঋণ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের শাস্তি নিশ্চিত না করে এমন ঘটনা কীভাবে রোধ করা সম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে বিচারের ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দেন গভর্নর। তবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে জানান তিনি।

অনেকটা নীরবে বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, রাজনৈতিক নানা ডামাডোলের মধ্যেও গত জানুয়ারি মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির ইতিবাচক দিক হলো স্থিতিশীলতা। গত বেশ কয়েক বছর যাবৎ গড়ে ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের ওঠানামার তারতম্য (ভেরিয়েশান) অত্যন্ত কম। সরকারি যন্ত্রগুলো সহায়ক হিসেবে কাজ করলেও অর্থনীতির সার্বিক উন্নতির জন্য তিনি বেসরকারি খাতকে বাহবা দিয়েছেন। বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে দ্রুত মুনাফার দিকে না ছুটে কম লাভ করে স্থিতিশীলতার দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং কৃষি খাতে ঋণ সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখার কৃতিত্ব হিসেবে আতিউর রহমানকে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সেরা গভর্নর হিসেবে সম্মাননা দেওয়া হয়।

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সমালোচনা করে গভর্নর বলেন, মন্দা কাটাতে এসব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের মতো ভুল পন্থা বেছে নিয়েছে। এতে বাজারে তারল্য বাড়ার কারণে ধনীদের সম্পদের মূল্য আরও বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু প্রান্তিক মানুষের কোনো লাভ হবে না। মন্দা মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রান্তিক অর্থনীতিকে বিবেচনায় নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে তাঁর অভিমত।


(ওএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৫)