ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দারুস শেফা ক্লিনিকে ভূল চিকিৎসায় মা হওার ক্ষমতা হারালেন নববধূ । ঘটনাটি ঘটেছে ,পেটের ব্যথা নিয়ে ক্লিনিকে গিয়েছিলেন
নববধূ রজনী খাতুন। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলেন মা হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে। এ ঘটনায় হতবিহ্বল রজনী (১৯) সারাক্ষণ কান্নাকাটি করছেন। তিনি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিচার দাবি করছেন।

অভিযোগ উঠেছে, অ্যাপেন্ডিক্স বলে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে চিকিৎসক রজনী খাতুনের ডিম্বাশয় কেটে দিয়েছেন।অস্ত্রোপচারের আগে স্বামীকে ডাকারও সুযোগ দেওয়া হয়নি। রোগী মরে যাওয়ার ভয়ে সঙ্গে থাকা এক আত্মীয়কে দিয়ে অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচার করেন ক্লিনিকের মালিকের স্ত্রী সদ্য এমবিবিএস পাস করা রেক্সোনা পারভিন। রজনী খাতুন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলারতৈলকূপ গ্রামের বাসিন্দা রংমিস্ত্রি চাঁদ আলীর মেয়ে। দুই বছর আগে একই উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের চা বিক্রেতা শাহজাহান আলীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। রজনী খাতুনজানান, খাওয়ার পর মাঝেমধ্যে তাঁর পেটের ডান পাশে সামান্য ব্যথা অনুভব করতেন। এ জন্য গত ১৯ জানুয়ারি স্বামী ও শাশুড়ী শাহিদা খাতুনকে নিয়ে দারুস শেফা ক্লিনিকে যান। ক্লিনিকের মালিক ফিরোজ আহম্মদতাঁকে আলট্রাসনো করাতে বলেন। আলট্রাসনো করার সময় তাঁর স্বামী জরুরি কাজে একটু বাইরে যান। এরপর আলট্রাসনো রিপোর্ট দেখে ফিরোজ তাৎক্ষণিক অস্ত্রোপচার করতে বলেন। তখন তাঁর স্বামীকে ডাকার সময় ও দেওয়া হয়নি। পাশে থাকা চাচি শাশুড়িকে দিয়ে অনুমতি পত্রে স্বাক্ষর করিয়ে বেলা দুইটার সময় তাঁর অস্ত্রোপচার করেন রেক্সোনো পারভিন। শাহজাহান আলী জানান, রোগী ছাড় করার সময় রেক্সোনা পারভিন তাঁকে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী আর মা হতে পারবেন না। তাঁর ডিম্বাশয়ে সমস্যা ছিল, সেটি কেটে ফেলতে হয়েছে। শাহজাহান আলী অভিযোগ করেন, রোগী ছেড়ে দিলে অন্যকোনো ক্লিনিকে চলে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় তাঁকে ডাকার সুযোগ না দিয়ে অস্ত্রোপচারকরে ফেলা হয়েছে।নাম প্রকাশ না করে একজনগাইনি চিকিৎসক জানান, সদ্যবিয়ে হওয়া কোনো কিশোরীর ডিম্বাশয়ে কোনো সমস্যা হলে ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। অনেক ক্ষেত্রে রোগী বাঁচাতে গিয়ে সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে এই পথ অবলম্বন করতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে একজন গাইনি সার্জন ছাড়া ডিম্বাশয়ে হাতদেওয়া কোনোভাবেই উচিত নয়। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন জানান,রেক্সোনা পারভিন কোনো সার্জন ননবিধায় কোনো অস্ত্রোপচার করতে পারেন না। বিষয়টি নিয়ে রেক্সোনা পারভিনেরসঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর স্বামী ক্লিনিকের মালিক ফিরোজ আহম্মদ দাবি করেন, রজনীর ডিম্বাশয়কাটা না হলে তাঁকে বাঁচানো যেত না। তাঁর স্ত্রী এ-জাতীয় অস্ত্রোপচার করতে পারেন কি না,জানতে চাইলে তিনি পারেন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন,‘একটা অভারি কাটা হয়েছে, আরেকটিতে সমস্যা আছে। আল্লাহ
চাইলে তাঁর সন্তান হতেও পারে।’
(জেআর/পিবি/ফেব্রুয়ারি ৮,২০১৫)