শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা সদরে অবৈধভাবে সরকারি জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। প্রশাসনের নাকের ডগায় এই নির্মান কাজ চলরেও রহস্যজনক কারনে নীরব রয়েছেন কর্মকর্তারা। সরকারি জমি দখলদার প্রভাবশালী হওয়ায় মুখ খুরতে সাহস পাচ্ছেনা সাধারণ মানুষ।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ভেদরগঞ্জ পৌরসভার ১০৪৬ ও ১০৪৭ নং দাগের সরকারি খাস জমির ওপর পৌর কর্তৃপক্ষের কোন রুপ অনুমোন ছাড়াই ভেগদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মান্নান বেপারী বহুতল ভবনটি নির্মাণ শুরু করছেন এক মাসেরও অধিক সময় ধরে। ভেদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ও বাজারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খালের একাংশ দখল করে পাইলিং দিয়ে ভবনের এক তলা নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ছাদ ঢালাইয়ের কাজ প্রক্রিয়াধীন। ভুমি অফিস সূত্রে জানা যায়, ভেদরগঞ্জ বাজারের উক্ত দুটি দাগের জমি সরকারের খাস খতিয়ানভুক্ত এবং পেরিফেরি (জরিপ বিহীন) বিহীন ।

১৯৯০ সালের ভূমি আইন অনুয়ায়ী যে সকল হাট বাজারের খাস জমি সরকারের পেরিফেরি ভুক্ত হয়েছে সে সকল অ-কৃষি ভুমি ব্যবসায়ীদের নামে অর্ধ শতাংশ করে এক বছর মেয়াদের জন্য বন্দোবস্ত দেয়ার বিধান রয়েছে। তবে ঐ সকল ভূমিতে কোন প্রকারের স্থায়ী ইমারত নির্মাণ করা যাবেনা। কিন্তু উল্লেখিত জমি পেরিফেরি ভুক্ত নয় তাই সরকারিভাবেও বন্দোবস্ত দেয়ার কোন বিধানও নেই। তার পরেও প্রায় চার শতাংশ জমি অবৈধ দখলে নিয়ে প্রভাবশালী এই আওয়ামীলীগ নেতা কোন রকম আইন বা নিয়মের তোয়াক্কা না করে নির্মান করে চলেছেন এই অট্টালিকা। ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ার কারণে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না স্থানীয় লোকজন।

এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল মান্নান বেপারী বলেন, জমিটি বরাদ্দ পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি কিন্তু এখনও বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দের পূর্বে কিভাবে ভবন নির্মাণ করছেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন দাপ্তরিক জটিলার জন্য সরকার বরাদ্দ দিতে পারছে না এ জন্য রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।

ভেদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দল মান্নান হাওলাদার বলেন, পৌর এলাকায় কোন ইমারত নির্মাণের পূর্বে পৌর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হয়। আমি যতটুকু জানি সরকারি জমি অবৈধ দখলে নিয়ে এই ভবনটি নির্মান করা হচ্ছে। এজন্য পৌরকর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেয়ার জন্য কোন আবেদন করা হয়নি। ভেদরগঞ্জ পৌরসভা ঐ ভবন নির্মাণের অনুমোদ দেয়নি। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ নেছার উদ্দিন জুয়েল জানান, বিষয়টি আইনী প্রক্রিয়াধীন, গত প্রায় ২০ দিন আগে ভবন নির্মাণ না করার জন্য আব্দুল মান্নান বেপারীকে একটি নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশ অমান্য করে তিনি ভবন নির্মানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে শুনেছি। কাজ বন্ধ করে নির্মানাধীন ভবনটি ভাঙ্গা না হলে উচ্ছেদ মামলা দেয়া হবে।
(কেএনই/পিবি/ফেব্রুয়ারি ১২,২০১৫)