দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর উপজেলায় সড়ক উন্নয়নের নামে নির্বিচারে দেশীয় প্রজাতির ফলজ বনজ গাছ কাটা হচ্ছে। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেও গাছ কাটা বন্ধ করতে পারছেনা। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা নির্বিচারে গাছকাটা বন্ধে সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। 

জানা গেছে, জেলার দুর্গাপুরের বিরিশিরি থেকে বিজয়পুর পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের কাজ চলছে। সীমান্তবর্তী ওই রাস্তার দু’পাশে রেইন্ট্রি, আম কাটাল সহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৬৮টি গাছ রয়েছে। সরকারী জায়গায় রাস্তার ওপর দেখিয়ে ওই সমস্ত গাছ নাম মাত্র মূল্য দেখিয়ে কেটে ফেলা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার দলীয় সমর্থক উপজেলার কামারখালী গ্রামের বিল্লাল হোসেন, বহেরাতলী গ্রামের আব্দুল হামিদ সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে গাছগুলো কেটে ফেলছে। এতে করে একদিকে এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ ভারসাম্য হারাচ্ছে, অপরদিকে ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে।
দুর্গাপুরের বহেরাতলী গ্রামের নাজিম উদ্দিন, বাসির উদ্দিন ও রানিখং গ্রামের যুগেন মারাক বলেন, সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ২২ ফুট প্রশস্থ করে সড়কের উন্নয়ন কাজ চলছে। সড়কের পাশে ২২ ফুটের মধ্যে কোন গাছ থাকলে কাটার কথা। কিন্তু সড়ক থেকে ৩৫-৪০ ফুটের মধ্যে ওই সমস্ত গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। প্রতিবাদ করেও কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
একটি সূত্রে জানা গেছে, সড়কের পাশে ওই সমস্ত গাছ রোপনের সময় স্থানীয় এলাকাবাসীকে নিয়ে পার্টিসিপেন্ট সমিতি করা হয়। সমিতির লোকজন ওই সমস্ত গাছ দেখাশুনা করবে এবং গাছ কাটার সময় একটি অংশ পাবে। কিন্তু তাদেরকে এ ব্যাপারে না জানিয়ে গাছগুলো কাটা হচ্ছে। স্থানীয় ৫১জন পার্টিসিপেন্ট গাছ কাটার প্রতিবাদ করলেও তাদের কথা শুনা হচ্ছেনা। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ আছে অজুহাতে নির্বিচারে গাছ কাটার কাজ চলছে। ইতিমধ্যে ২০টি গাছ কেটে নিয়ে গেছে কর্তনকারীরা। বাকি গাছ কাটার কাজ চলছে। এলাকাবাসী গাছ কাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছেন।
স্থানীয় কুল্লাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান পাঠান তুতু বলেন, সড়কের দুই পাশে গাছ কাটার কাজ চলছে। এলাকার স্বার্থে সরকারী নিয়ম মেনে গাছগুলো কাটার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু আমার কথা কেউ শুনেনি। প্রসঙ্গ এড়িয়ে তিনি আরও বলেন- এ ব্যাপারে ইউএনও সাহেব ভাল বলতে পারেন।
দুর্গাপুর ইউএনও সাইফুল ইসলাম বলেন, সড়কটি উন্নয়নের জন্য সড়কের পাশে এলাকাবাসীর কাছ থেকে কিছু জায়গা অধিগ্রহন করা হয়েছে। সড়কের দু’পাশে কিছু গাছ টেন্ডারের মাধ্যমে কাটা হচ্ছে। এর মধ্যে ব্যক্তি মালিকানায় গাছ থাকলে সে গুলোর মূল্য তারা পাবে। নির্ধারিত জায়গার বাইরে গাছ কাটার কথা শুনেছি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।
সড়ক ও জনপথের প্রকৌশলী মো. মাসুদ খান শুত্রবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন ছোট বড় ও মাঝারী ধরনের ৫০টি গাছ আটক করেছেন।
(এনএস/এএস/মে ০৯, ২০১৪)