স্বাস্থ্য ডেস্ক : আমাদের মৃত্যুঝুঁকি বেড়েই চলেছে। এর কারণ হিসেবে গবেষণায় উঠে এসেছেঅসচেতনভাবে খাদ্য গ্রহণ এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কে অজ্ঞতা অসচেতনতা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত শতকরা ২৫ ভাগ মৃত্যুঝুঁকি কমাতে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যেখানে এই ১৫ বছরে সারা বিশ্বে ৩৭ মিলিয়ন লোকের অকাল মৃত্যু ঝুঁকি কমানো সম্ভব। কিন্তু তা কীভাবে? এজন্য কিছু বিষয়কে নির্ধারণ করা হয়েছে, যেগুলো এড়িয়ে চললে এই মৃত্যুঝুঁকি কমানো সম্ভব।

ধূমপান না করা :
বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ ধূমপানে আসক্ত। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০২৫ সালের মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগ লোকের ধূমপান আসক্তি কমানোর প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এরই মধ্যে অবশ্য অনেক উন্নত দেশেই প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ করেছে এবং এর জন্য জরিমানাও অন্তর্ভূক্ত করেছে। ফলে ধূমপানের আসক্তি কিছুটা কমেছে বলে আশা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
মদ্যপান থেকে বিরত থাকা :
আমাদের দেশে মদ্যপান একটি দন্ডনীয় অপরাধ। তবে শীতপ্রধান দেশগুলোতে মদ্যপান করা হয় মূলত শীতের হাত থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়ার জন্য। তবে অতিরিক্ত মদ্যপান একটি অপরাধমূলক প্রবণতা বলেও স্বীকৃত। এ কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অতিরিক্ত মদ্যপানের বিষয়টিকে জরিপে আনার চেষ্টা করছে। অতিরিক্ত মদ্যপানে মানুষের মৃত্যুঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। এটি কমানোর ফলে মৃত্যুঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
কাঁচা লবণ না খাওয়া :
অনেকেরই লবণ খাওয়ার এক ব্যাপক আসক্তি রয়েছে। তরকারিতে যতই লবণ হোক না কেন কাঁচা লবণ তাদের লাগেই। লবণে সোডিয়ামের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। এর ফলে ব্লাড প্রেসার এবং হৃদ-সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতা এমনকি স্ট্রোক হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। উন্নত দেশগুলোতেও অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার বিষয়টি দেখা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে আমেরিকানরা প্রতিদিন অতিরিক্ত প্রায় ৮০০ মিলিগ্রাম লবণ গ্রহণ করে। এর ফলে মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়। মৃত্যুঝুঁকি কমাতে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া কমানো উচিৎ।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা :
মৃত্যুঝুঁকি কমাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার পরামর্শ দিয়েছে। অতিরিক্ত সোডিয়াম দেহে ব্লাড প্রেসার বাড়িয়ে দেয়, হাইপারটেনশন বাড়িয়ে দেয় যা থেকে হৃদজনিত সমস্যা এমনকি স্ট্রোক হতে পারে। প্রতিদিন রক্তচাপ মেপে দেখে নিয়ন্ত্রণে আনা প্রয়োজন। এর জন্য বিভিন্ন ব্যায়াম, মেডিটেশন এবং খাদ্য গ্রহণে নিয়ন্ত্রণ রাখা দরকার। ফলশ্রুতিতে মৃত্যুঝুঁকি কমবে।
ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা :
বর্তমানে ডায়াবেটিস ছাড়া কোনো সুস্থ মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ দুঃসাধ্য ব্যাপার। একটু বয়স বাড়লেই ডায়বেটিসের সমস্যাটা ধরা পড়ে। বিভিন্ন উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশগুলোতে এই ডায়বেটিসের কারণে হৃদজনিত সমস্যা, কিডনির সমস্যাসহ অন্যান্য আরও অনেক সমস্যার দেখা দেয় যার ফলে জীবনের সময়কে সংক্ষিপ্ত করে ফেলে। মৃত্যুঝুঁকি কমাতে এখন থেকেই খাবারে চিনির পরিমাণ কমিয়ে দেয়া উচিৎ, কিছুদিন পর পর ডায়বেটিসের মাত্রা পরীক্ষা করা উচিৎ এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী তা নিয়ন্ত্রণে আনা উচিৎ।
স্থূলতা কমানো :
মৃত্যুঝুঁকি কমাতে হলে রিচ ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের রিচ ফুড গ্রহণ করে থাকি। এছাড়া উন্নত দেশগুলোতে রিচফুড খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি। এ কারণে এসব দেশে মৃত্যুঝুঁকি বেশি হয়ে থাকে। মৃত্যুঝুঁকি কমাতে এই ধরনের রিচ ফুড থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে হবে।
(ওএস/এএস/মে ০৯, ২০১৪)