বান্দরবান প্রতিনিধি : মায়ানমার সীমান্তবর্তী  বান্দরবানের দুর্গম রিজার্ভ ফরেষ্ট এলাকায় প্রতিবছর ধংস করা হয় পপি (আফিম) বাগান। চলতি বছর পুনরায় মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সদস্যরা স্থানীয় পাহাড়ীদের দিয়ে পপি চাষ করায় বান্দরবান সেনা রিজিয়নের উদ্যোগে পপি বাগান ধংসের কর্মসুচি হাতে নেয়। রিজার্ভ ফরেষ্টের অত্যন্ত দুর্গম ও জনমানবহীন নিরবিচ্ছিন্ন পাহাড়ী এলাকায় পপি চাষ ধংসের অভিযানে নামে সেনাবাহিনী ৩টি ও বিজিবি’র ১টি ইউনিট। গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পপি বাগান ধংসের অভিযান শুরু হয় এবং আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই অভিযান অব্যহত থাকবে বলে জানান সেনা কর্মকর্তারা।

পপি বাগান আনুষ্ঠানিক ধংসের অভিযানে সাংবাদিকেদের হেলিকপ্টারে করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেনা ও বিজিবি’র যৌথবাহিনীর ক্যাম্প থেকে ৪-৫ কিলোমিটার গহীন অরণ্যে সন্ধান পাওয়া ৫টি পপি বাগান ধংস করা হয়। পপি বাগান ধংসের অভিযানে উপস্থিত ছিলেন রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী, পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য্যসহ সেনাবাহিনী ও বিজিবি’র উর্ধাতন কর্মকর্তাগণ।
আলীকদম সেনা জোনের কমান্ডার লেঃ কর্নেল মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে এই অভিযানে অংশ নিয়েছে প্রায় আড়াই’শ সেনা ও বিজিবি সদস্য। লেঃ কর্নেল মিজানুর রহমান জানান, অভিযানে ২.৫ একর জায়গায় ছোট বড় ২৪টি পপি বাগান ধংস করা হয়েছে। মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা স্থানীয়দের ভয়ভীতি দেখিয়ে পপি চাষে বাধ্য করছে। অভিযান প্রতি বছর অব্যহত থাকায় পপি চাষ অনেকাংশে কমে এসেছে বলে তিনি দাবি করেন।
অন্যান্য বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে পপি’র কষ সংগ্রহ করলে ও প্রতিবছর হেলিকপ্টারের সহযোগিতা নিয়ে সেনাবাহিনী পপি বাগান ধংস করার কারণে এ বছর সন্ত্রাসী ২ মাস পিছিয়ে পপি চাষ করে। অবশেষে এই পপি বাগানও আফিম কষ সংগ্রহ করার আগে ধংস করে দেয় সেনাবাহিনী ও বিজিবি’র জোওয়ানরা।
এদিকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী জানান, বিচ্ছিন্ন কিছু সন্ত্রাসী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশে করে স্থানীয়দের দিয়ে এই পপি চাষ করান। প্রতিবছর অভিযানে পপি বাগান ধংস করার কারণে এই বছর তারা মৌসুম পরিবর্তন করেছে। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। সেনা ও বিজিবি’র সদস্যরা দুর্গম অরন্য ভেদ করে খুজে বের করেছে পপি বাগান। অবশেষে তা ধংস করা হচ্ছে। স্থানীয়দের পপি চাষে নিরুৎসাহিত করতে ও পপি চাষ থেকে বিরত রাখতে স্থানীয় পপি চাষীদের পুর্নবাসন করা হবে। ইতি মধ্যে অনেক সাফল্যও এসেছে। তাদের পুর্নবাসনে জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহন করেছে। সরকারের সার্বিক সহায়তা পেলে তাদের পুর্ণবাসন করা হবে।
(এএফবি/পিবি/ফেব্রুয়ারি ১৭,২০১৫)