ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ঈশ্বরবা গ্রামের তাহাজ মন্ডল (৫৫) কলার মোচা বিক্রি করে কোনমতে সংসার চালান। দীর্ঘ ৩০বছর ধরে তিনি কালীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে কলার মোচা বিক্রি করে আসছেন। এতে যা আয় হয় তা দিয়েই কোনো রকমে চলে যাচ্ছে ৬ সদস্যে পরিবারের সংসার।

 

তাহাজ মন্ডলের ৪ ছেলে ২ মেয়ে। ইতোমধ্যে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন বেশ কষ্ট করে। ছেলেদের মধ্যে একজন ঘাতক ব্যাধি গ্যাংরিনে আক্রান্ত। বাকি ৩ ছেলে পরের জমিতে কামলা খাটে। মাঠে এক খণ্ড জমি নেই, আবার শারিরিকভাবে দুর্বল হওয়ায় ভারি কাজও করতে পারেন না ।তাই বেঁচে থাকার তাগিদে আয়ের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছেন কলার মোচার ব্যবসা। হতদরিদ্র এই ব্যক্তির নাম তাহাজ মন্ডল। ছেলেদের আয়ে সংসার চলেনা তারপর অসুস্থ্য ছেলের ওষুধ খরচের টাকা জোগাড় করতে তাকে হিমশিম খেতে হয়। তাই এ বয়সেও তাকে কাজ করতে হয়। কলার মোচা বিক্রি করতে তাকে প্রতিদিন প্রায় ১০/১৫কিলোমিটার পথ হাঁটতে হয় বিভিন্ন গ্রাম ও পাড়া মহল্লায়।প্রতিদিন ৩০/৪০টি কলার মোচা দু’টি ঝুড়িতে সাজিয়ে বাঁকে করে বিক্রি করেন। প্রতিটি কলার মোচা ৮/১০ টাকা দরে বিক্রি হয়। তাহাজ মণ্ডল জানান ৩০/৪০টি মোচা বিক্রি করতে তাকে প্রায় শত বাড়িতে ঘুরতে হয় । প্রত্যেক দিন সব মোচা বিক্রি হয় না তার। যেদিন অল্প সংখ্যক মোচা বিক্রি হয় সেদিন তিন বেলা খাবার জোটেনা । তাহাজ মণ্ডল জানান, কলার মোচা সংগ্রহ করতে তাকে বিভিন্ন গ্রামের কলাচাষীদের কাছে ধরণা দিতে হয়। চাষীরা কলার মোচা বাবদ কোনো টাকা-পয়সা নেয়না । মোচা কাটার সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত থেকে তিনি বিনা মূল্যে মোচা গুলো সংগ্রহ করেন। কিন্তু সব সময় কলার মোচা পাওয়া যায় না। এজন্য বর্ষা মৌসুমে কলমী শাক, হেলেঞ্চা শাক ও শাপলা ফুল সংগ্রহ করেন বলে জানান। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে কলার মোচা বিক্রি করায় তাহাজ মণ্ডল শহরের অনেকের কাছে মোচা চাচা হিসেবে পরিচিত।
(জেআর/পিবি/ফেব্রুয়ারি ২২,২০১৫)