স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : এই প্রশ্নের মুখে পৃথিবীর অনেক মানুষকেই পড়তে হয়েছে। ফুটবল বলুন, আর ক্রিকেট; নিজের দেশের দলের বিপক্ষে প্রায় সব পেশাদার কোচকেই জীবনে কখনো না কখনো মুখোমুখি হতে হয়। নিঃসন্দেহে এ এক যন্ত্রনার অনুভূতি।

চান্দিকা হাতুরুসিংহের জন্য যন্ত্রণাটা আরও বেশি মনে হয়। তিনি তো সাধারণ একজন শ্রীলঙ্কান নন। নব্বইয়ের দশকে শ্রীলঙ্কা দলের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। এই দল নিয়ে ভেবেছেন, এই দল নিয়ে বড় হয়েছেন। এই দলের কোচ হিসেবেও স্বপ্ন দেখেছেন। এই শ্রীলঙ্কা দলেই আছেন তার জীবনের প্রিয়তম দুই শিষ্য সাঙ্গাকারা ও জয়াবর্ধনে। কিন্তু আগামীকাল এমসিজিতে সেই দলের বিপক্ষেই রণপরিকল্পনা করতে হবে হাতুরুসিংহেকে।

আজ মাশরাফির সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটা উঠেছিল। শুধু হাতুরুসিংহে নন, দলের স্পিন কোচ রুয়ান কালপাগে, ফিটনেস কোচ মারিও ভিল্লাবারায়েনও শ্রীলঙ্কান। সবাইকে মিলিয়েই মাশরাফি বললেন, ‘হ্যা, আমাদের প্রধাণ কোচই তো শ্রীলঙ্কান। এ ছাড়া আমাদের সাপোর্ট স্ট্যাফে আরও শ্রীলঙ্কান আছে। কিন্তু এখন তারা বাংলাদেশের টীম মেম্বর। তারা যতোদূর বুঝতে পারছি, প্রাণপনে বাংলাদেশের জন্যই পরিকল্পনা করছেন। আগামীকাল শ্রীলঙ্কাকে কিভাবে হারানো যায়, সেটাই ভাবছেন।’

কালপাগেও শ্রীলঙ্কা দলের গুরুত্বপূর্ন সদস্য ছিলেন। ফলে তার জন্যও ব্যাপারটা আজ মনের এক লড়াইয়ের।

মনের লড়াইটা হাতুরুসিংহের জন্য অনেক বেশী। ১৯৯১ সালে জাতীয় দলের হয়ে খেলা শুরু করা হাতুরুসিংহে একে একে ২৬টি টেস্ট ও ৩৫টি ওয়ানডে খেলেছেন শ্রীলঙ্কার হয়ে। ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে দারুন পারফরম্যান্সও ছিল। ১৯৯৬ সালে এক ঝাক উঠতি তরুনের ভিড়ে একটু হারিয়ে গেলেও ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত কমবেশী খেলেছেন।

এরপর জাতীয় দলের ‘ছায়া কোচ’ হিসেবে হয়ে উঠেছিলেন সাঙ্গাকারা ও জয়াবর্ধনেদের প্রিয় গুরু। তাকে ছাটাই করার খবরে রীতিমতো বিদ্রোহ করেছিলেন সাঙ্গা।

কিন্তু আজ সব ভুলে যেতে হবে হাতুরুসিংহেকে। আজ তিনি আর শ্রীলঙ্কান নন; আজ তিনি খাটি বাংলাদেশি।

(ওএস/পি/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫)