কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : সাত বছরের নাতনী রিম্পার আবদার, তার জন্য কুয়াকাটা থেকে তার জন্য ঝিনুক কুড়িয়ে আনতে হবে। তাই শেষ বিকালে সৈকতের সানসেট পয়েন্ট থেকে জোয়ারে সদ্য ভেসে আসা ঝিনুক কুড়াচ্ছেন কুড়িগ্রাম থেকে আসা মনিষা রানী। তার সাথে একই জায়গা থেকে ঝিনুক কুড়াচ্ছেন বাঘেরহাটের আয়েশা খাতুন। গতকাল শেষ বিকালে কুয়াকাটা সৈকতে তাদের মতো শতশত মানুষকে দেখা যায় ঝিনুক কুড়াতে। গত তিনদিন ধরে কুয়াকাটা সৈকতে প্রচুর ঝিনুক ভেসে আসায় গোটা সৈকত থেকে ঝিনুক কুড়ানোর উৎসব শুরু হয়েছে। এ কারণে সৈকত জুড়ে চলছে খোঁড়াখুড়ি।

মনিষা রানী বলেন, কুয়াকাটায় এক আত্মীয়ের বাসায় শুক্রবার রাতে বেড়াতে এসেছেন। নাতনীর স্কুল খোলা থাকায় সাথে আসতে পারেনি। তাই তার আবদার মেটানোর জন্য ঝিনুক সংগ্রহ করছেন। তবে মনিষা নাতনীর আবদার পুরণ করতে ঝিনুক কুড়ালেও সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বস্তায় বস্তায় ঝিনুক সংগ্রহ করছে একদল মানুষ।



কুয়াকাটা সৈকত ঘুরে দেখা যায়, সৈকতে হঠাৎ করে প্রচুর ঝিনুক ভেসে আসছে। আগেও সৈকতের বালুচরে ঝিনুক দেখা গেলেও এবার প্রচুর ভেসে আসছে। সৈকতে ঝিনুক সংগ্রহকারী ইব্রাহিম, কাওসার ও শহিদুল জানায়, তারা ঝিনুক সংগ্রহ করছেন বিক্রির জন্য। এ ঝিনুক থেকে বিভিন্ন ধরনের খেলনা তৈরি করা হয়। তাই এগুলো তারা ঢাকায় পাঠাবেন। প্রতিমন ঝিনুক ৪/৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয় বলে তারা জানান। তবে বড় ঝিনুকের দাম ৮ হাজার টাকারও বেশি। এছাড়া সৈকতের ছোট ছোট শামুক ও ঝিনুক ও তারা তুলছেন। এ ছোটগুলোর দাম ১/২ হাজার টাকা। এগুলো খেলনা তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয়। প্রতিদিন তারা ৩/৪ মন ঝিনুক সংগ্রহ করতে পারছেন বলে জানান। এভাবে তাদের মতো কুয়াকাটা সৈকতের ঝাউবাগান, মাঝিবাড়ি, জিরো পয়েন্ট, গঙ্গামতি সৈকত ও ফাতড়ার চর থেকে প্রতিদিন অন্তত ২/৩’শ মানুষ ঝিনুক সংগ্রহ করছে বলে তারা জানান।

কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা ঢাকার আসাদুল, বরিশালে ফয়সাল, ফরিদপুরের অহনা জানান, শেষ বিকালে সৈকতের বালুচরে ঝিনুক দেখতে অপরুপ লাগে। গোটা সৈকত দেখলে মনে হয় সাদা কার্পেট বিছানো। কিন্তু সৈকতের বালু খুঁড়ে এভাবে সৈকতে গর্ত করলে সৈকতের বালু আলগা হয়ে শ্রীহীন হয়ে যায়। তাই পর্যটন কর্তৃপক্ষের উচিত ঝিনুক উত্তোলন বন্ধ করা।

এ ব্যাপারে কলাপাড়া বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন জানান, ঝিনুক সংগ্রহ বা বিক্রির ব্যাপারে কোন আইনী বাঁধা নেই। আর সৈকতে যেগুলো আসে তা মরা ঝিনুক। তকে সৈকত নষ্ট করে ঝিনুক তোলা উচিত না।

(এমকেআর/এএস/মার্চ ০২, ২০১৫)