বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম মুন্সির (৩৮) ওপর বর্বর হামলা চালিয়ে দুর্বৃত্তরা। তাকে রড ও হাঁতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মাথা ও হাত-পা গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রবিবার রাত ১০ টার দিকে ওই ইনিয়নের আমড়াগাছিয়া বাজারে এ হামলার এঘটনা ঘটেছে।

পরে স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই রাতেই তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও তার অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল সোমবার ভোরে তাকে খুলনা থেকে ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে পরিবার ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

এঘটনায় জড়িত সন্দেহে একই এলাকার ডালিম হোসেন (৩৫), শামীম আকন (৪৫), রহমান হাওলাদার (৪৫), মনির হাওলাদার (২৮) ও আসাদ হাওলাদারকে (২৫) আটক করেছে পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, প্রতিদিনের ন্যায় শামীম মুন্সি পরিষদের কাজকর্ম সেরে ওইদিন রাত ১০টার দিকে বাসায় ফিরছিলেন। তিনি পরিষদ সংলগ্ন ব্রিজের ওপর উঠতেই পুর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা ১০-১২ জন মুখোশধারী দুর্বৃত্ত হামলা শুরু করে। তাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে প্রত্যেকের হাতে থাকা লোহার রড, হাঁতুড়ি ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে শামীমকে। এতে তার মাথার হাড় ও হাত-পা গুড়িয়ে যায়। এছাড়া তার শরীরের ভিবিন্ন অংশে মারাত্মক জখম হয়। এঅবস্থায় দুর্বৃত্তরা মৃত ভেবে শামীমকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তার চিৎকার শুনে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

শামীম মুন্সীর সহকর্মী একই পরিষদের মেম্বার রেজাউল করিম পল্টু এ ঘটনায় ওই ইউনিয়েনর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিম আকনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মহিম আকন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে বলেন, দলের মধ্যে ফাঁটল ধরাতে কোনো তৃতীয় পক্ষ শামীম মুন্সির ওপর হামলা চালিয়ে। তিনি এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির বাবুল বলেন, স্থানীয় রাজনৈতিক দ্বন্দের কারণে শামীম মুন্সি হামলার শিকার হয়েছেন। ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম বলেন, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সকালে সন্দেহভাজন পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধের কারণে শামীমের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্তের সার্থে এই মুহুর্তে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।

(একে/এএস/মার্চ ০৯, ২০১৫)