ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : মসজিদটি বারোবাজার ইউনিয়নের বেলাট দৌলতপুর মৌজায় অবস্থিত। ইসলামী ঐতিহ্যের এক অনুপম নিদর্শন গোড়ার (গোরাই) মসজিদ। মসজিদের পূর্বদিকে একটি পুকুর আছে।

মসজিদ থেকে পুকুরে যাওয়ার জন্য বাঁধানো ঘাট ছিল। ভাঙ্গা ইটের উপস্থিতি ও স্থানে স্থানে প্রোথিত ইটের চিহ্ন তা প্রমাণ করে। বারান্দাসহ এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি বর্গাকৃতি। এ মসজিদটি অবস্থিত মসজিদগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা ভাল অবস্থায় ছিল। ১৯৮৩ সালে প্রত্মতত্ত্ব বিভাগ কর্তৃক খননের পর দেখা গেছে, গম্বুজের কেন্দ্রস্থল ২ ফুটের মত ভাঙ্গা। বৃত্তাকার ও উপুড় করা পেয়ালার মতো দেখতে গম্বুজটি অত্যন্ত মনোরম। মসজিদের পাশে একটি কবরের সন্ধান পাওয়া যায়। এটি গোরাই নামের এক দরবেশের মাজার বলে অনেকের ধারণা। তাঁর নামানুসারে এ মসজিদকে গোড়ার (গোরাই) মসজিদ বলা হয়। বর্তমানে এ মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়া হয়। মসজিদে ৫ ফুট প্রশস্ত দেয়াল আছে। পুর্বের দিকে ৩টি প্রবেশদ্বার , দু'পাশের দু'টি অপেক্ষাকৃত ছোট। উত্তর ও দক্ষিণের দেয়ালে ২ টি বড় ও ২ টি ছোট মোট ৪টি প্রবেশ পথ ছিল। এখন এগুলো জানালা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পশ্চিমের দেয়ালে ৩টি মেহরাব আছে। পশ্চিম দেয়ালে ৭/৮ ফুট লম্বা ২টি এবং উত্তর ও দক্ষিণের দেয়ালে ২টি মোট ৪ টি কালো পাথরের স্তম্ভ আছে। মসজিদের দেয়ালে পোড়মাটির পত্র-পুস্পে শোভিত শিকল, ঘন্টা, ইত্যাদি আরোও অনেক নকশা আছে।
এ মসজিদের বাইরের দেয়াল সম্পূর্ণটাই পোড়ামাটির কারুকার্য দ্বারা চমৎকার ভাবে অলংকৃত। মসজিদটি মুসলিম স্থাপত্যের এক নয়নাভিরাম ও অনন্য উদাহরণ। এটি সম্ভবত হোসেন শাহ বা তার পুত্র নসরত শাহ কর্তৃক নির্মিত। এ মসজিদের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায় গৌড়ের সাত্তম ও খনিয়া দীঘি মসজিদ, দিনাজপুরের সুরা মসজিদ, দেওয়ানগড় মসজিদ, টাঙ্গাইলের আতিয়া মসজিদ ও সিংহদার আওলিয়া মসজিদের।

(জেঅার/পিবি/মার্চ ১১,২০১৫)