নওগাঁ প্রতিনিধি : বরেন্দ্র এলাকা খ্যাত নওগাঁর পত্নীতলায় ঘরে বসে কেঁচো সার উৎপাদন করে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে স্থানীয় চাষিরা। স্বল্প খরচে পরিবেশ বান্ধব এই সার ব্যবহারে এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে।

জানা গেছে, পত্নীতলা উপজেলার দিবর ইউনিয়নের ইটাপুকুর গ্রামের কৃষক খাইরুল ইসলাম ‘দি হাঙ্গার প্রজেক্ট’ নামে বেসরকারি একটি সংস্থা থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে প্রায় ৬ মাস পুর্বে মাত্র ২০টি এফিজিক ও এ্যানোসিক কেঁচো দিয়ে কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোষ্ট উৎপাদন শুরু করে। অল্প দিনেই তার কেঁচো সার উৎপাদন ও কেঁচোর সংখ্যা বাড়তে থাকলে একই গ্রামের তজের উদ্দীন, আবুল কালাম, ফতেপুর গ্রামের নাসির উদ্দীন, বাঁকরইল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী আয়েশা খাতুন উক্ত খাইরুলের কাছ থেকে প্রতি পিস কেঁচো ২ টাকায় কিনে নিয়ে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করে। প্রথম দিকে তারা তাদের কেঁচো সার নিজেদের জমিতে ব্যবহার করে ভালো ফলাফল পাওয়ায় কেঁচো সার উৎপাদনে মনোযোগ তারা বাড়িয়ে দেয়। তারা প্রত্যেকে ২০টি কেঁচো দিয়ে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করলেও বর্তমানে তাদের সকলের ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার পিচ করে কেঁচো রয়েছে। তারা কেঁচো সার ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রির পাশাপাশি প্রতিটি কেঁচো ২ টাকায় বিক্রি করে বর্তমানে বেশ লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে।
‘দি হাঙ্গার প্রজেক্টের’ দিবর ইউনিয়নের সেচ্ছাসেবী ও ইউথ লিডার খাইরুল ইসলাম জানান, ‘দি হাঙ্গার প্রজেক্ট’ থেকে জাতিসংঘের এমডিজি গোল এর ১ ও ৭ নং উদ্দেশ্য পুরনের লক্ষ্যে দিবর ইউনিয়নের আরো ২৪ জনকে কেঁচো সার উৎপাদনের জন্য প্রশিক্ষন দেয়া হয়েছে। নাইট্রোজেন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জৈব উপাদান সমৃদ্ধ কেঁচো সার জমিতে ব্যবহার করে ফসলের ফলন বাড়ার কারণে এলাকার চাষীরা তাদের জমিতে কেঁচো সার ব্যবহার শুরু করেছে। স্বল্প খরচে পরিবেশ বান্ধব এই কেঁচো সার আগামীতে আরো উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়াতে দি হাঙ্গার প্রজেক্টের কর্মীরা এলাকায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষন ও উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসুচী চালিয়ে যাচ্ছেন।
এব্যাপারে পতœীতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আখতারুজ্জামান জানান, যারা এই কেঁচো সার উৎপাদন করে আসছে, তাদেরকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এই সার মাটির জৈব পদার্থ বৃদ্ধি সহ অনুজৈবিক কার্যাবলি তরান্বিত করছে। এ সার পুরোপুরি পরিবেশ বান্ধব। এ সার রাসায়নিক সারের ঘাটতি পুরণে সক্ষম এবং মাটির পানি ধারন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই সার কৃষকদের মাঝে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যাপক সাড়া ফেলছে বলেও দাবি করেন তিনি।
(বিএম/এএস/মে ১১, ২০১৪)