কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সকল মাধ্যমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা নিষিদ্ধ গাইড বই এবং বাংলা ব্যাকরণ ও ইংরেজী গ্রামার কিনতে বাধ্য হচ্ছে।

সরকারি নির্দেশে সব ধরনের প্রকাশনীর গাইড বই ও ইংরেজী গ্রামার এবং বাংলা ব্যাকরণ পড়ানো সমপূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষনা করলেও দৌলতপুর উপজেলার মাধ্যমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা সমুহের প্রধান শিক্ষকগণ এসকল নামী-বেনামী প্রকাশনীর নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের এসব বই কিনতে বাধ্য করছে।
তাছাড়া সরকারীভাবে দেয়া ইংরেজী গ্রামার এবং বাংলা ব্যাকরণ ছাত্র/ছাত্রীদের পড়ানো হচ্ছেনা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার ৯৮ টি মাধ্যমিক নিম্ন মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা সমুহের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকাশনী গুলো পাঠ্যক্রম-২০১৫ তৈরী করে বিদ্যালয় গুলোতে সরবরাহ করেছে। সেই পাঠ্যক্রম-২০১৫ অনুসারে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত ইংরেজী গ্রামার ও বাংলা ব্যাকরণ কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। সরকারিভাবে বিদ্যালয় সমূহের চাহিদার ভিত্তিতে দৌলতপুরে ৩৮,৬৮০ জন ছাত্র/ছাত্রীর বিপরীতে বাংলা ও ইংরেজী গ্রামার সরবরাহ করা হলেও শিক্ষকরা তা না পড়িয়ে বিভিন্ন প্রকাশনীর ইংরেজী গ্রামার এবং বাংলা ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
গাইড পড়ানো নিষিদ্ধ হলেও ‘সংসদ’ একের ভিতর সব‘ নামের গাইড বই ছাত্র/ছাত্রীদের কিনতে বাধ্য করা হয়েছে।
উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ দৌলতপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দৌলতপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়,আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বিসিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাছেরদিয়াড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জয়রামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বিডিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তারাগুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রিফাইতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হোসেনাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ইসলামপুর ও ফিলিপনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খাস মথুরাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ডিজিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পাকুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মহিষকুন্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ডিজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বড়গাংদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গোয়ালগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও খলিশাকুন্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ সকল বিদ্যালয়ে এসব নিম্ন মানের বই পড়ানো হচ্ছে জেনে অবিভাবক ও সচেতন মহল বিস্ময় প্রকাশ করেছে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, সরকারের দেয়া গ্রামার বই পড়ে ছাত্ররা কিছু শিখতে পারছেনা বিধায় এসব গ্রামার ও ব্যাকরণ পড়ানো হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, প্রকাশনীর প্রতিনিধি ও বিভিন্ন লাইব্রেরীর মালিকদের নিকট থেকে প্রধান শিক্ষকরা ৭০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা উৎকোচ নিয়ে এসকল নিম্নমানের বই ছাত্র-ছাত্রীদের কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় শিক্ষকরা এসকল গ্রামার ও গাইড কিনতে ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্য করছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ জানান, কোনক্রমেই বোর্ড বইয়ের বাইরে কোন গ্রামার, ব্যাকরণ বা গাইড বই পড়ানো যাবেনা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমূল হক পাভেল জানান, এসএসসি পরীক্ষা শেষ হবার পর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(কেএইচ/পিবি/মার্চ ১৮,২০১৫)