সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদীর মাদিয়া নামক স্থানে ২০০ ফুট ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে রবিবার দুপুরে জোয়ারের পানি ঢুকে বুড়িগোয়ালিনি ও আটুলিয়া ইউনিয়নের ১০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে ৪০০টির বেশি ছোট বড় চিংড়ি ঘের । রাতের মধ্যে বাঁধ সংস্কার করা না গেলে প্রবল জোয়ারে আরো তিনটি ইউনিয়নের ২০ টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনি ইউনিয়নের মাদিয়া গ্রামের চিংড়ি ঘের মালিক স্বপন কুমার গাতিদার জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে তার ঘেরের সামনে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড- ১ এর ৫নং পোল্ডারের আওতাধীন খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধের ২০০ ফুট ধ্বসে যায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ফাটল আরো বাড়তে থাকে। দুপুর দু’টোর টার দিকে জোয়ারের পানি প্রবল জোরে লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে। ফলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বুড়িগোয়ালিনি ইউনিয়নের ভামিয়া, মাদিয়া, আড়পাঙাসিয়া, পূর্ব দুর্গাবাটি, পোড়াকাটলা, আটুলিয়া ইউনিয়নের বয়ারসিং, হিঞ্চি, বড় কুপট ও ছোট কুপট গ্রাম প্লাবিত হয়।

জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে দু’ হাজার বিঘার ছোট বড় ৪০০ টি চিংড়ি ঘের ও পুকুর। এতে পাঁচ কোটি টাকার বেশি ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়াম্যানের উদ্যোগে গ্রামবাসি স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করে। রাতের মধ্যে এ বাঁধ সংস্কার কাজ শেষ করা না গেলে সোমবার ভোরের জোয়ারে মুন্সিগঞ্জ, ঈশ্রীপুর ও শ্যামনগর সদর ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বুড়িগোায়ালিনি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও আটুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ডাঃ একেএম ডাঃ আব্দুল হামিদ জানান, স্থানীয় গ্রামবাাসিদের সহায়তার বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ৫০০টি বাঁশ ও এক হাজার সিমেন্টের বস্তা দেওয়া হয়েছে। সাংসদ এসএম জগলুল হায়দার, জেলা প্রশাসক নামজুল আহসান, পানি উন্নয়ন বোর্ড- ১ এর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সায়েদ মোহাম্মদ মঞ্জুর আলম, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড - ১ সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী নিখিল রঞ্জন বৈদ্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

শ্যামনগর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জালালউদ্দিন জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এই মুহুর্তে নির্নয় করা সম্ভব নয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা -১ এর সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী নিখিল রঞ্জন বৈদ্য জানান, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ভাটা শুরুর পর জরুরী ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

(আরকে/এএস/মার্চ ২২, ২০১৫)