বাগেরহাট প্রতিনিধি  : বাগেরহাটে হযরত খানজাহান (র:) বসতভিটা মধ্যযুগের ঐতিহাসিক নগর খলিফাতাবাদে চলতি বছরের  খনন কাজ সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ করেছে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর।

সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ১৩ লাখ টাকা ব্যায়ে মধ্য যুগের স্বীকৃত প্রত্নস্থান হিসেবে সুলতানী আমলের হযরত খানজাহানের বসতভিটার খনন স্থান থেকে এবছর সুলতানী যুগের ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের সৌখিন তৈযষপত্র, মৃৎশিল্প,চুন দিয়ে তৈরী স্টোন ওয়্যার, পলিক্রম ওয়্যাার, গেলইজড ওয়্যার, স্লিপযুক্ত ওয়্যার, সেলাডন, চাইনিজ পোরসেলিন, এগ শেল মৃৎপাত্র পাওয়া গেছে। এছাড়া খননের সময়ে খলিফাতাবাদ নগরের ইমারতের বিভিন্ন দেয়াল, দেয়ালের দুই পাশে বসতি তৈরীর নমুনা, রাস্তা,বিভিন্ন আয়তকার পোড়া মাটির ইট, এসব নির্মান কাজের জন্য চুন সুড়কি, চুন বালি ও শামুক ঝিনুক ব্যবহার করা হয়েছিল। খননের সময়ে ব্যতিক্রম ধর্মী চুন বালি মিশ্রিত করার একটি আঁধার পাওয়া গেছে।

এছাড়া স্থাপত্য কাঠামো ধ্বংসাবশের মধ্যে একটি সেপটি ট্যাংকসহ পাকা শৌচাগার , পানি সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত ১৭ মিটার পোড়া মাটির তৈরী পাইপ, পানি নিষ্কাশন নালা ও ইটের তৈরী কার্ভাড নালা। সুলতানি যুগে ব্যবহৃত অলংকৃত বিভিন্ন ধরনের রঙ্গিন টালী, ফুলের নকসাকৃত ও লতাপাতা অলংকৃত ইট রয়েছে। প্রাপ্ত এ প্রত্ননসম্পদের আলোকে প্রত্নতত্ববিদরা ধারনা করছেন তারা মধ্য যুগের সুলতানি আমলের খানজাহানের ঐতিহাসিক নগর খলিতাবাদের ধ্বংস বিশেষ তারা আবিস্কার করতে পেরেছে। প্রায় তিন মাস ধরে চলা এ খনন কাজে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নত্তত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোকাম্মেল হোসেন ভুইয়াসহ ওই বিশ্ব বিদ্যালয়ের ৪০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

সোমবার দুপুরে ষাটগুম্বজ ইউনিয়নের বাজেয়াপ্ত সুন্দরঘোনা গ্রামে প্রত্নত্তত্ব অধিদপ্তর আনুষ্ঠানিক ভাবে এ খনন কাজের সমাপ্তি করেন। প্রত্নত্তত্ব বিভাগের ষাটগুম্বজ মসজিদের কাস্টডিয়ান গোলাম ফৈরদৌসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রনালয় সম্পকির্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা এমপি। অন্যানের মধ্যে বক্তৃতা করেন পত্নত্তত্ব অধিদপ্তর খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক মোঃ আমিরুজ্জামান, সহকারী পরিচালক একেএম সাইফুর রহমান,অধ্যক্ষ মোঃ সইফ উদ্দিন , ষাটগুম্বজ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আকতারুজ্জামান বাচ্চু প্রমুখ। প্রধান অতিথি তার বক্তৃতায় বলেন প্রত্নত্তত্ব অধিদপ্তরের এ খনন কাজের মধ্য দিয়ে আধুনিক খলিফাতাবাদ নগরী যেমন আবিস্কিৃত হয়েছে তেমনি প্রায় ৬শ বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যের পাশাপাশি মহামূল্যবান অনেক প্রত্নসম্পদ পাওয়া গেছে। বর্তমান সরকারের আমলে মধ্য যুগের সুলতানী আমলের বাগেরহাটে হযরত খানজাহানের ঐতিহাসিক খলিতাবাদ নগরের সব খনন কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

(একে/পিবি/মার্চ ২৩,২০১৫)