সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর চর ভরাটি জমি দখল করে পাকা স্থাপনা তৈরির প্রতিযোগিতা চলছে। নির্মাণ করা হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা। দখলকারীদের অত্যাচারে যমুনা তার নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে।  এ দখলের সঙ্গে রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা, যুবলীগ নেতা, সাংবাদিক, থানা ক্যাশিয়ারসহ বিভিন্ন ধরনের মানুষজন।

অভিযোগ, জবরদখলকারিরা ক্ষতাসীন দলের হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে অবৈধ স্থাপনা সরানোর জন্য কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না।


পানি উন্নয়ন বোর্ড কালীগঞ্জ উপজেলা অফিস সুত্রে জানা গেছে, কাকশিয়ালী নদীর সংযোগ স্থল থেকে যমুনা নদীর কালীগঞ্জ থানার সামনে চরভরাটি জমিতে উপজেলা নির্বাহী অফিস সংলগ্ন স্লুইজ গেট পর্যন্ত এলাকা জুড়ে পাকা স্থাপনা নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কথিত থানা ক্যাশিয়ার শহিদুল ইসলাম ওরফে পুটে, আওয়ামী লীগ নেতা মোজাহার হোসেন কান্টু, সাবেক উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ইকবাল আলম বাবলু, জাহিদুর রহমান বাবু, ফারুক হোসেন, নিয়াজ কওছার তুহীন, সুজিত সরকার। সাবেক থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমদাদুল হক শেখ (বর্তমানে সদর থানায়) তাদেরকে এ সব ঘর নির্মানে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ থাকলেও তিনি তি অস্বীকার করেন। এর মধ্যে মোজাহার হোসেন কান্টু নির্মাণাধীন মার্কেটের লিংটন পর্যন্ত তৈরির কাজ শেষ করেছেন। তবে এসব জবর দখলকারীরা সংশ্লিষ্ট কারো কোনো অনুমতি না নিয়েই ইচ্ছে মত যমুনা নদী দখল করে তাতে পাকা স্থাপনা নির্মান করেছে। পিঠ বাঁচাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড- ১ এর পক্ষ থেকে সেকশান অফিসার ওবায়দুল হক মল্লিক ,মাস দু’য়েক আগে কারো নাম উল্লেখ না করে থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছেন। তবে জবরদখলকারিরা এ নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।


নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সাতক্ষীরা জেলা শাখার আহবায়ক অধ্যক্ষ আশেক-ইলাহী জানান, ইছামতি না বাঁচলে অন্যান্য নদী বাঁচবে না। তিনি বলেন, ইছামতির সাথে যুক্ত রয়েছে খোলপেটুয়া, যমুনা, মরিচ্চাপ, কপোতাক্ষ ও বেতনা নদী। বর্তমানে যমুনা নদী যে ভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে তাতে করে অন্যান্য নদী বাঁচানো সম্ভব হবে না। তিনি আরো বলেন, থানার সামনেই এক শ্রেনীর ভুমিদস্যুরা প্রবহমান যমুনা নদী গ্রাস করে তাতে পাকা স্থাপনা নির্মান করছে। তবে ওই সব ভুমিদস্যুদের কবল থেকে যমুনা নদী রক্ষার দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে স্মারকলিপিও দেয়া হয়েছে নদী বাচাও আন্দোলন কমটিরি পক্ষ থেকে।


কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহমেদ জানান, চলমান নদী দখল করে সেখানে পাকা স্থাপনা তৈরী করা এটি খুবই অপরাধ। পানি উন্নয়ন বোর্ড লিখিত ভাবে জানালে যে কোনো সময় এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে দেয়া হবে। যে হেতু এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধিন সেকারনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একক ভাবে কিছু করা সম্ভব নয়।


সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন ১- এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ জানান, কালীগঞ্জ উপজেলা সদরের সামনে চলমান যমুনা নদী অবৈধ দখল করে বেশ কিছু পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না।

আরকে/এএস/মার্চ ২৫, ২০১৫)