কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও গণহত্যাকারী তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও কুশপুত্তলিকা দাহ কর্মসূচি পালন করেছে মুক্তিযোদ্ধা জনতা। সোমবার সকালে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা জনতার ব্যানারে এক সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আমিনুল ইসলাম মঞ্জু মণ্ডল, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম টুকু, সাবেক সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল বাতেন, মুক্তিযোদ্ধা শমসের আলী, মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী, মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী, আওযামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান বাবু সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আনিছুর রহমান চাঁদ,, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান কাজিউল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিনহাজুল ইসলাম আইয়ুব প্রমুখ। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চীপ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর বিরূদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে গণহত্যা, নির্যাতন, বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে বীর প্রতিক আব্দুল হাই ২০০৮ সালের ৭ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা ডোমাস চন্দ্র ও আব্দুল করিমকে মোগলবাসা থেকে ধরে এনে হত্যার অভিযোগে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কুড়িগ্রাম সদর থানার ডায়রী নম্বর-২৫৩। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর মোগলবাসা থেকে ঐ দুই মুক্তিযোদ্ধাকে তাজুল চৌধুরীর নেতৃত্বে ধরে আনা হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ১৯৭১ সালের ৯ জুন তাজুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে কাঁঠালবাড়ী এলাকায় ৩৫ জন মানুষকে হত্যা ও বাড়িঘর পুরিয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা আক্তারুজ্জামান মণ্ডলের ‘উত্তরের রণাঙ্গন’ গ্রন্থের ১৯৬ পৃষ্ঠায় এ ঘটনার বর্ণনা রয়েছে।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম টুকু বলেন, তাজুল ইসলাম চৌধুরী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম ২ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কুড়িগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষ এমন একজন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে সাংসদ হিসেবে মেনে নিতে পারছে না। এ কারণে এই প্রতিবাদের আয়োজন।
বীর প্রতিক আব্দুল হাই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের ধারক বাহক হিসাবে দাবি করলেও একজন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে এমপি নির্বাচিত করে।এ ঘটনা কুড়িগ্রামবাসীর সাথে প্রতারণার সামিল। তাজুলের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অভিযোগ থাকলেও নেয়া হয়নি আইনি ব্যবস্থা।

(আরএ/এএস/মে ১২, ২০১৪)