আব্দুস সালাম বাবু( বগুড়া):বগুড়ায় চলতি বছর গমের বাম্পার ফলন পাচ্ছে চাষিরা। চাষাবাদের জমি বৃদ্ধির সাথে সাথে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বগুড়া অঞ্চলের চাষিরা ভাল ফলন ঘরে তুলতে শুরু করেছে। জেলায় ফাল্গুুন মাসেও বেশ শীত থাকায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গমের বেশি উৎপাদন হবে বগুড়ায়।

চলতি বছর গমের উৎপাদন দাঁড়াবে ৭ হাজার মেট্রিক টন। বগুড়া জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, বগুড়ায় একসময় গমের আবাদ অনেক বেশি হতো। মাঝে ভুট্টার আবাদ চলে আসায় এবং বেশি লাভের কারণে চাষীরা ভুট্টার আবাদ শুরু করে। বাজারে গমের চেয়ে ভুট্টার দাম বেশি থাকায় বগুড়া অঞ্চলে গমের আবাদ কমে যায়। জেলায় সবচেয়ে বেশি গম আবাদ হয়ে থাকে সোনাতলা ও সারিয়াকান্দি উপজেলায়। গত ৩ থেকে ৪ বছরে জেলায় গমের চাষাবাদ বেড়েছে। ২০১৩ মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে গমের চাষ করা হয়। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার মেট্রিক টন। ২০১৪ সালে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ৩৫১ হেক্টর। ফলন ধরা হয়েছিল ৬ হাজার ৪শত মেট্রিক টন।

গত বছর সেখানে মোট ফলন পাওয়া যায় ৬ হাজার ৮১৫ মেট্রিক টন। আবাহাওয়া অনুকুলে থাকায় গমের উৎপাদন বেশি হয় ৪ শত মেট্রিক টন। ২০১৫ মৌসুমে জেলায় চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ২৩০ হেক্টর। নভেম্বর মাসে শুরু হওয়া গম চাষ বৃদ্ধি পেয়ে মোট চাষাবাদ হয়েছে ২ হাজার ৫০০ হেক্টর। এর বিপরীতে উৎপাদন ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৯১৩ মেট্রিক টন। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন জেলায় এবারো উৎপাদন বেড়ে ৭ হাজার মেট্রিক টনে দাঁড়াবে।

এছাড়া চাষাবাদের জমি বৃদ্ধির পাশাপাশি বগুড়ায় ফাল্গুন মাস পর্যন্ত শীত থাকায় গমের আবাদ ভাল হয়েছে। শীতকাল গমের আবাদের জন্য ভাল বলে বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে। এ কারনে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার জিয়ানগর গ্রামের আজাহার হোসেন জানান, গমের আবাদ করে ভাল ফলন পাওয়া গেছে। নতুন গম বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। অনেকেই আবার গম মাড়াই শুরু করেছে। খোলা বাজারে বেশি শুকনা গম বিক্রি হচ্ছে প্রতিমন ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা করে। পাইকারি বাজারে সাড়ে ৭০০ থেকে সাড়ে ৮০০ টাকা মন।

বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারের গম বিক্রেতা হযরত আলী জানান, বাজারে নতুন গম পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি কেজি গম বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজি। গমের দাম হয় শুকনা এবং দানার উপরে। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা সদর এলাকার কবির জানান, আবাদের পর থেকে ঝড় তেমন না হওয়ায় দানা ভাল হয়েছে। ভালমানের দানা নিয়ে এলাকার চাষিরা গম কাটতে শুরু করেছে। হাটে কিছু নতুন গম পাওয়া গেলেও সেগুলো ভাল শুকায় নি। শুকনো কম হলে গমের দাম কমে যায়। চলতি বছর গম চাষিরা ভাল দাম পাচ্ছে। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক চন্ডি দাস কুন্ডু জানান, গমের আবাদ বেড়েছে বগুড়ায়। গত বছর বাজারে গমের দাম ভাল পেয়েছে চাষিরা। শীতকাল থাকায় চলতি বছর গমের যে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তা ছাড়িয়ে যাবে।

(এএসবি/এসসি/মার্চ২৮,২০১৫)