ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠির রাজাপুরে পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার চুরির হিড়িক পড়েছে। চুরি ঠেকাতে জনসচেতনতার লক্ষে উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি মাইকিং করেছে। গ্রাহকরা চোরের হাত থেকে ট্রান্সফর্মার রক্ষার জন্য শিকল ও তালা ব্যবহার করেও প্রতিকার পাচ্ছে না।

জানা গেছে, এ বছরের জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত ৩ মাসে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ৭টি ট্রান্সফর্মার চুরি হয়েছে। আর এ ট্রান্সফর্মারগুলো পুনরায় স্থাপনের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে তাদের ধার্য্যকৃত হারে টাকা জমা দিয়ে গ্রাহককেই ট্রান্সফর্মার আনতে হচ্ছে। একটি ট্রান্সফরমার প্রথমবার চুরি হলে গ্রাহককে অর্ধেক মুল্য পরিশোধ করতে হয়। পরবর্তীতে যতবার চুরি হবে তার সম্পুর্ণ মুল্যই গ্রাহককে বহন করতে হচ্ছে। এ চুরি যাওয়া ৭টি ট্রন্সফরমারের মধ্যে কোনোটি তিনবারও চুরি হয়েছে। আর এ রকম চুরির ঘটনা এ উপজেলা অহরহ ঘটছে। গ্রাহকদের অভিযোগ পল্লীবিদ্যুতের দক্ষ কর্মচারিরাই এ চুরির সাথে জড়িত।

গ্রহকরা অভিযোগ করে বলেন, পল্লীবিদ্যুতের দক্ষ কর্মচারিরাই এ চুরির সাথে জড়িত এবং চোরের সাথে যোগসাজোসের মাধ্যমে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং দিয়ে ট্রান্সফর্মা চুরিতে সহযোগীতা করা হচ্ছে। সদরের মেডিকেল মোড়ের গ্রাহকরা জানান, ৫৩ হাজার টাকা মূল্যের ১০ কেবি’র ট্রান্সফর্মারটি ২৩ মার্চ পর্যন্ত ৩ বার চুরি হয়েছে। আর এ ৫৩ হাজার টাকা সম্পুর্ণটাই গ্রাহককে গুণতে হচ্ছে।

এ ট্রান্সফরমারের আওতার মধ্যে মধ্য ও নিন্মবিত্ত পরিবার রয়েছে ৫/৭ জন গ্রাহক। তাদের পক্ষে এ টাকা যোগার করতে খুবই সমস্যায় পড়তে হয় এবং টাকা দিতে দেরি হওয়ায় এখন পর্যন্ত ট্রান্সফর্মার স্থাপন করতে পারেনি। ইতোমধ্যেই ভ্যাবসা গরম শুরু হয়েছে। তাই এ ট্রান্সফরমারের এর সাথে জড়িত পরিবারের স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থীসহ প্রায় শতাধিক লোক চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। গ্রাহকরা আরও অভিযোগ করেন, জেলার চার উপজেলার মধ্যে যে উপজেলা গ্রাহকের তুলনায় কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করে দেখাতে পারেন সেই প্রকৌশলীকে বছর শেষে পদায়ন বা বিভিন্নভাবে পুরুষ্কৃত করে থাকেন। এ পুরুষ্কারের আশায় উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ প্রকৌশলী মতিউর রহমান কয়েক মাস আগে যখন ছিলেন, তখন প্রতিদিন ৮/১০ বার লোডশেডিং দিতেন। সে বদলি হয়ে যাবার পরে অন্য প্রকৌশলী আসায় লোডশেডিং অনেককাংশে কমে যাওয়ায় গ্রাহকরা স্বস্তি নিশ্বাস ফেলেন কিন্তু বর্তমানে মতিউর রহমান আবার যোগদান করে বিদ্যুত লাইনের ত্রুটি ও ভান্ডারিয়া মূলগ্রীডে সমস্যার অযুহাত পূর্বের ন্যায় প্রতিদিন ৬-৭ বার লোডশেডিং দিচ্ছেন। এ বিষয়ে উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ প্রকৌশলী মতিউর রহমান সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গরম পড়ছে তাই বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় লোডশেডিংও বেড়ে গেছে। এছাড়া চাহিদার তুলনায় সরবরাহও কম রয়েছে।

(এএম/এএস/মার্চ ২৯, ২০১৫)