কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : ব্রিজ থাকলেও প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সড়ক যোগাযোগ। এ কারণে ছয়টি গ্রামের প্রায় আট হাজার মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ধুলাসার ইউনিয়নের ডোরা খালের উপর আয়রন ব্রিজটির সিমেন্টের স্লাব ভেঙ্গে খালে পড়ে যাওয়ায় এবং ব্রিজের লোহার এ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা পড়ে ভেঙ্গে কাঁত হয়ে যাওয়ায় এখন মৃত্যুফাঁদে পরিনত হয়েছে ব্রিজটি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নুরুদ্দিন জানান, গত দুই বছর ধরে ব্রিজটি চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় পশ্চিম ধুলাসার, চর ধুলাসার,পূর্ব ধুলাসার, উত্তর ধুলাসার, দক্ষিন চর ধুলাসার ও ধুলাসার গ্রামের মানুষকে প্রায় ৫/৭ কিলেমিটার ঘুরে উপজেলা সদরসহ স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গ্রামীন বাজারে যেতে হচ্ছে। প্রায় ৩০ বছর আগে নির্মিত এ আয়রন ব্রিজটি স্লাব ভেঙ্গে ডোরা খালে পড়ে গেছে। এছাড়া ব্রিজটি এক দিকে কাঁত হয়ে পড়ায় ব্রিজের বাকি স্লাবগুলোও ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে।

ধুলাসার বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন কলেজ ও চর ধুলাসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার একমাত্র ব্রিজটি গত দুই বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ কারণে স্কুল-কলেজগামী সহস্রাধিক ছাত্র-ছাত্রী সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে।

স্থানীয়রা এ ব্রিজ সংস্কারের জন্য সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের দুটি গাছ কেটে কাঠের তক্তা বানিয়ে ব্রিজে লাগিয়ে চলাচলের উদ্যেগ নিলেও বন কর্মীরা বাঁধা দেয়ায় সে উদ্যেগ ভেস্তে যায়। অথচ উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের সভাপতি মোস্তফা হাওলাদার নিজে সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের ছয়টি তাল গাছ কেটে ঘর নির্মান করেছেন বলে স্থানীয় গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগ, বনের গাছ সভাপতি বিক্রি করছেন অথচ গ্রামবাসীদের চলাচলের সুবিধার্থে দুটি গাছ ভাঙ্গা ব্রিজে লাগাতে দিচ্ছেন না।

স্থানীয় ব্যবসায়ী রিপন চক্রবর্তী জানান, বর্ষাকালে গ্রামীন রাস্তা ঘাট কর্দমাক্ত হয়ে যাওয়ায় স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীরা সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগ পোহায়। ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জামান হোসেন জানান, ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় ওই ছয়টি গ্রামের মানুষ অসুস্থ্য হয়ে পড়লেও তাদের দ্রুত হাসপাতাল কিংবা কমিউনিটি ক্লিনিকে নিতে পারছে না তাদের স্বজনরা।

স্কুৃল শিক্ষক মো. নুরুননবী জানান, জরুরী ভিত্তিতে এই আয়রন ব্রিজটি সংস্কার না করলে বর্ষা মেীসুমে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারবে না। তাছাড়া ভাঙ্গা এই ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান।

ধুলাসার উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের সভাপতি মোস্তফা হাওলাদার ছয়টি গাছ কাঁটার কথা স্বীকার করে বলেন ব্রিজটি ভাঙ্গা। কিন্তু ব্রিজ ঠিক করার জন্য কারা গাছ কেটেছে তা তিনি জানেন না। তবে ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করা উচিত বলে তিনি জানান।
কলাপাড়া এলজিইডি’র প্রকৌশলী মো. আ. মন্নান জানান, কলাপাড়ার বিধ্বস্ত আয়রন ব্রিজগুলোর তালিকা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্ধ পাওয়া গেলে এগুলো সংস্কারের উদ্যেগ নেয়া হবে।

(এমকেআর/এএস/মার্চ ৩১, ২০১৫)