নিউজ ডেস্ক : মডেল ,ফ্যাশন তারকা কিংবা সিনেমার হিরোদের শুধু দেখতে সুন্দর বা স্মার্ট লাগবে, এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। সকল পেশার ক্ষেত্রেই দেখতে সুন্দর, গোছানো ও কাজকর্মে পরিপাটি হওয়াটা একটা বাড়তি গুণ হিসেবে কাজ করে। অনেকে মনে করেন রূপচর্চা ও পরিপাটি সাজগোজ শুধুমাত্র মেয়েদের জন্যই প্রযোজ্য।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ শরীরের নিয়মিত যত্ন নেওয়া বা সাজানো গোছানো চলাফেরার বিষয়ে অনেক পুরুষেরাই উদাসীন।

কিন্তু সত্যিকার অর্থে বেশ কিছু ক্ষেত্রে নারীদের থেকে বরং পুরুষদের আরও অনেক বেশি সচেতন হওয়া দরকার। কারণ তাদেরকেই তুলনামূলকভাবে বেশি ঘরের বাইরে ঘোরাফেরা করতে হয়।

কর্মজীবী পুরুষদের জন্য কিছু টিপস-

১. সকালে একটু আগেভাগেই ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করুন। মনও যেমন ফুরফুরে থাকবে, আর সময়মতো কর্মক্ষেত্রে পৌঁছে কাজে মন দেওয়াটাও সহজ হবে। যারা সারাদিন অফিসে থাকেন তাদের সকালে গোসল করে বের হওয়া ভালো। এতে আপনাকে সতেজ ও প্রাণবন্ত লাগবে, কাজের প্রতিও আগ্রহ বাড়বে।

২. অফিস থেকে ফিরে আবার গোসল করে নিতে পারেন। সারাদিনে শরীরে জমা ময়লা আর ক্লান্তি দুইই দূর হবে, ঘুমটাও অনেক ভালো হবে। প্রতিদিন সাবান দিয়ে গোসল করার অভ্যাস করুন। সুগন্ধি সাবানের মধ্যে ডাব সাবান ব্যবহার করুন। এতে শরীরের ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কার হবে।

৩. পরের দিন কী কী কাজ করবেন বা কার কার সাথে কখন দেখা করবেন তা আগের দিন রাতে ঘুমানোর আগেই পরিকল্পনা করে রাখুন। মনে না থাকার সম্ভাবনা থাকলে ডায়েরি, মোবাইল বা নির্দিষ্ট কোথাও নোট করে রাখতে পারেন। এতে পরের দিন পরিকল্পনামাফিক কাজ করা সহজ হবে।

৪. বেশি রাত জাগার অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করার চেষ্টা করুন। এতে সকালের ঘুম ভাঙতে দেরি ও কষ্ট হয়, কাজেরও ক্ষতি হয়। বেশি দেরি করে ঘুম থেকে উঠলে আপনার সারাদিনের পরিকল্পনাটাই এলোমেলো হয়ে যেতে পারে। এছাড়া রাত জাগাটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর।

৫. কর্মেক্ষেত্রে একাধিক পোশাক রাখুন। এক পোশাক বারবার না পরে একদিন পরার পরই ধুয়ে ফেলুন। সবসময় ধোয়া এবং আয়রন করা কাপড় পড়ার চেষ্টা করবেন।

৬. ঘামের দুর্গন্ধে যেনো আপনার পাশের লোকটির কষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করতে পারেন। সুগন্ধী অর্থাৎ পারফিউম বা বডি স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। তবে অবশ্যই তা যেনো খুব বেশি কড়া না হয়।

৭. এক থেকে তিন দিন পরপর চুলে শ্যাম্পু করুন। শ্যাম্পু করার পর চুল শুকিয়ে তাতে হেয়ার ক্রীম, জেল বা হার্বাল অয়েল দিতে পারেন। এতে চুলের সৌন্দর্য বাড়বে।

৮. রোদের হাত থেকে রার জন্য সানস্ক্রীন সমৃদ্ধ জেন্টস ক্রীম ব্যবহার করতে পারেন।

৯. অনেকের সারা বছরই ঠোঁট ফাটে। তারা লিপজেল সঙ্গে রাখুন।

১০. ত্বকের বাড়তি যত্ন নিতে জেন্টস্ উপটান ব্যবহার না করে জেন্টস্ পার্লার থেকে মাসে একবার ফেসিয়ালও করাতে পারেন।

১১. বাইরের ধুলাবালির কারণে অনেকের শ্বাস কষ্ট হয়। সেক্ষেত্রে মুখে মাস্ক ব্যবহার করলে অনেকটা রেহাই পাওয়া যায়। রুমালও ব্যবহার করা যেতে পারে। সবসময় সঙ্গে রুমাল ও টিস্যু পেপার রাখুন। বাসে বা পথে ঘাটে চলার সময় মাথায় ক্যাপ পড়লে বাইরের ধুলাবালি থেকে চুল বাঁচানো যায়। বাইরের রোদ ও ধুলাবালি এড়াতে ব্যক্তিত্ব ও পোশাকের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ রোদচশমা ব্যবহার করুন। জুতা মোছার জন্য আলাদা একটি ছোট্ট রুমাল রাখতে পারেন।

১২. সময়ানুবর্তিতা ঠিক রাখার জন্য সঙ্গে অবশ্যই একটি ঘড়ি রাখুন। ভালো ব্র্যান্ডের রুচিসম্মত হাতঘড়ি ব্যবহার করাই ভালো।

১৩. যেসব অফিসের নির্দিষ্ট করে দেয়া কোনো পোশাক নেই সেসব ক্ষেত্রে জাঁকালো বা চোখ ধাঁধানো পোশাক পরিহার করে মার্জিত ও ভদ্র পোশাক পরিধান করুন। বড় চুল বা ঝুটি, গলায় চেইন, হাতে আংটি, এগুলো সাধারণত পেশাদারিত্ব ক্ষুণ্ন করে।

১৪. অনেকের মুখে দুর্গন্ধ হয়। এতে আশে পাশের লোকজনেরও সমস্যা হয়। এরকম হয়ে থাকলে সমস্যাটাকে এড়িয়ে না গিয়ে নিয়মিত মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন। বাসা থেকে বের হবার আগে মাউথওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে কুলি করে নিলে ভালো কাজ হয়। তবে বিভিন্ন কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু রোগের কারণেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। তাই মাউথওয়াশ ব্যবহারের পরেও কাজ না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। অনেক সময় মোজা না ধোয়ার ফলে দুর্গন্ধ হয়। মোজা নিয়মিত ধুয়ে ব্যবহার করুন।

১৫. নিয়মিত চুল ও নখ কেটে ছোট রাখবেন।

১৬. গ্যাস্ট্রিক, এলার্জি, হাঁপানি ইত্যাদি রোগ থাকলে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সাথেই রাখুন। কারণ প্রয়োজনের সময় হাতের কাছে এসব নাও থাকতে পারে।

১৭. অফিসে যাওয়ার সময় গাড়ি রাস্তায় জ্যামে আটকে থাকলে বিরক্ত না হয়ে এই সময়টায় বাসে বা গাড়িতে বসে সকালের পত্রিকাটা পড়তে পারেন। এতে সময়টা অপচয় হলো না আর আপনিও আপডেট হয়ে গেলেন।

(জেএ/মে ১৩, ২০১৪)