বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে ৫০ বছরের অভিনয় জীবন তাঁর। অভিনেত্রী কবরী দীর্ঘ এই সময়ে পেয়েছেন অগণিত মানুষের ভালোবাসা ও নানা পুরস্কার। এ বছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আসর থেকে তাঁকে দেওয়া হয়েছে আজীবন সম্মাননা।

গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কবরীকে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদক ও স্মারকের পাশাপাশি পুরস্কার হিসেবে কবরী পেয়েছেন এক লাখ টাকা। পুরস্কারের এই টাকা তিনি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের কল্যাণে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

কবরী তাঁর নির্বাচনী এলাকা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেধাবী শিক্ষার্থী ও অটিস্টিক শিশুদের কল্যাণে এই টাকা ব্যয় করবেন। কয়েক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারের এই টাকা হস্তান্তর করবেন তিনি। গ্রিনভ্যালি ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠনে টাকা দেবেন তিনি। পুরস্কারের অর্থ থেকে ৫০ হাজার টাকা বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে দান করবেন। বাকি ৫০ হাজার টাকা নারায়ণগঞ্জের ৪৫ জন সুবিধাবঞ্চিত প্রতিবন্ধীকে দিয়ে দেবেন।

কবরী বলেন, ‘ঢাকা শহরে সবাই কমবেশি সুযোগসুবিধা পায়। কিন্তু ঢাকার বাইরের মানুষেরা আনুপাতিক হারে সব ধরনের সুযোগসুবিধা কমই পেয়ে থাকেন। সেই বিষয়টি চিন্তা করে পুরস্কারের টাকা নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্কুলপড়ুয়া বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেধাবী শিক্ষার্থী ও অটিস্টিক শিশুদের কল্যাণে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বেশ কয়েকটি স্কুলে আমি সভাপতি ছিলাম। সে সময় আমি ৪০-৪৫টি শিশুকে পুষ্টিকর টিফিন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। কিন্তু নানা গন্ডগোলের কারণে আমি দিতে পারিনি। আমি এখন তা দিতে চাই।’

কবরী এও বলেন, ‘অভিনয় করে আমি অনেক কিছুই পেয়েছি। মানুষের ভালোবাসা তার মধ্যে অন্যতম। এর কোনো তুলনা নেই। জীবনে চলার পথে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের দুঃখকষ্ট আমাকে সব সময় পীড়া দিয়েছে। সব সময় চেষ্টা করেছি তাঁদের পাশে থাকার।’

সম্মাননা পাওয়ার অনুভূতি জানিয়ে কবরী বলেন, ‘আমার এই পুরস্কার মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসর্গ করছি। চলচ্চিত্রশিল্পে দত্তদা (সুভাষ দত্ত) থেকে শুরু করে অনেকের সহযোগিতা পেয়ে দর্শকদের কাছে মিষ্টি মেয়ে হতে পেরেছি। এ ক্ষেত্রে রাজ্জাক, আলমগীর, ফারুক, প্রবীর মিত্র, সুমিতা দেবীর নাম না বললেই নয়। তাঁদের সহযোগিতা না থাকলে, আমি কবরী হতে পারতাম না।’

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী কবরী। মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে পা রাখেন তিনি। ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে বড়পর্দায় যাত্রা শুরু। প্রথম ছবির সাফল্যের পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি কবরীকে। একের পর এক ছবিতে অসাধারণ অভিনয় উপহার দিয়েছেন। অর্জন করেছেন দারুণ জনপ্রিয়তা। দর্শকের ভালোবাসায় পেয়েছেন ‘মিষ্টি মেয়ে’ খেতাব। রাজনীতির মাঠেও সফল বিচরণ তাঁর। দায়িত্ব পালন করেছেন সাংসদ হিসেবেও।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ০৫, ২০১৫)