রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করে পরীক্ষার হলে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।

শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের একটি কোর্সের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান ওই বিভাগের মাস্টার্সের পরীক্ষার্থী।

তিনি অসুস্থতার কথা বলে পরীক্ষা বন্ধ করতে বিভাগের শিক্ষকদের কাছে অনুরোধ করেন। কিন্তু একজনের জন্য পরীক্ষা না পেছানোর সিদ্ধান্ত জানানো হয় বিভাগ থেকে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রানা চৌধুরী ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মুসতাকিম বিল্লাহর নেতৃত্বে ১৫/২০ নেতাকর্মী শহীদুল্লাহ কলা ভবনে গিয়ে পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত হলের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে নির্ধারিত সময়ে তালা ভেঙে পরীক্ষা নিতে যান বিভাগের শিক্ষকরা। এনিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষকদের বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। এসময় পরীক্ষার হলের দরজা-জানালা ভাঙচুর করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

এতে বাধা দিলে একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন।

শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, পরীক্ষা বন্ধ করতে বহিরাগত তিনজন ছাত্রলীগ কর্মী বিভাগের দুই শিক্ষকের সামনে অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দেন।

রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রানা চৌধুরী বলেন, আমাদের এক বন্ধু অসুস্থ হওয়ায় আমরা পরীক্ষা পেছানোর জন্য অনুরোধ করি। আমরা কোনো ভাঙচুর বা কাউকে লাঞ্ছিত করিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা বলেন, সমস্যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে চায়নি। তারপরও শিক্ষকরা জোর করে পরীক্ষা নিতে চাওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এখানে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেন রানা।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সভাপতি সৈয়দা নূরে কাসেদা খাতুন বলেন, ছাত্রলীগের এক নেতা অসুস্থতার কথা বলে আজকের পরীক্ষা বন্ধ করতে বলেছিলেন। কিন্তু একাডেমিক মিটিংয়ে এ পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ায় আমরা পরীক্ষা বন্ধ করতে রাজি হইনি। কিন্তু তারা এসে ভাঙচুর ও শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করায় বাধ্য হয়ে পরীক্ষা বন্ধ করেছি।

পরে একাডেমিক মিটিং করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

(ওএস/এটি/মে ১৩, ২০১৪)