প্রেমপুত্র

একাকী থাকছো বলে অভিমান!
অভিমানী, আমিও তো একা।
যে রাতগুলোতে বসন্ত ছিলো,

সে রাত মনেতে রেখে পার করি চৈত্র।
আমাদের সাঁকোহীন এই বসবাস-
লাঙ্গলে কষিত মাটির মতন;
এখানেই জন্ম নেবে সহবাস।
পাবে না আমার বিকল্প পাত্র।
এই যে দূরত্ব শারীরিক,
মানুষিক ভাবে আরো কাছে টানে।
আকাশ তো একটাই,
এই অভিযান হোক যত্রতত্র।
জলে ডুব দিয়ে জল পান,
আমার চরিত্র নয়।
আদিঅন্ত নিজেকে চিত্রিত
করবোই হয়ে প্রেমপুত্র।

ঘুম

কি একটা পাখি গেল রাতভর ডেকে।
আধো আধো ঘুমে সাড়া দেইনি তখন।
যখন জানতে চাইলাম, কাকে ডাকো পাখি?
দেখি, আঁধার পাতলা হয়ে গেছে,
জানালার পাশের কাঁঠাল গাছের পাতাগুলো দুলছে বাতাসে,
মেঘের ভেতর থেকে উঠে আসছে রোদের মূল।
বিছানায় গড়াগড়ি খেতে খেতে, হাই তুলতে তুলতে ঘুমাই আবার!
নাগের বাজার, রবীন্দ্র সদন বা ধর্মতলা পেরিয়ে গেছে উড়ে উড়ে শহুরে পাখিটা!
হয়ত আমাকে গ্রাম ভেবে- এসেছিল
ঘুম চোখে নিতে।

মিলনের আকাঙ্ক্ষায়

শঙ্খকে বাজানো হয়,
নিরাবতাই পছন্দ ওর।
বাজালে যে সুর ওঠে, সে সুর সাগরেরই বেদনায়!
আমি বুঝি, বিচ্ছেদ মানুষকেও শঙ্খ করে দেয়।
আমাকে বাজিয়ে যার পূজা হয়,
সে শুধুই মাটি।
আমিও মাটিই ছিলাম একদা দুনিয়ায়।
তুমি, কেবল তুমিই জানো;
কোন মাটি দিয়ে কি বানানো যায়।
আমাকে আবার মানুষ বানাও,
মানুষীর সাথে মিলনের আকাঙ্ক্ষায়।

ছাতি

দিনে নয়, রাতে ব্যবহার হলো ছাতি;
ছাতির নিচেই আমরা একত্রে- মুচিপাড়া থেকে দমদমে।
এ বৈশাখী মেঘের কি হলো আজ!
ছাতির ধরুনি ধরে একটু একটু দিলাম সরিয়ে,
বৃষ্টির শীতল ক্ণা যেন লাগে চুলে।
এককালে মা এ ছাতি আমাকে দিয়েছে,
রোদ বৃষ্টি যেন না লাগতে পারে।
আর আজকাল ছাতিতে প্রায়ই রোদ বৃষ্টি ঢুকে পড়ে!
তুমি থাকলে তেমন আসেই না।
কিন্তু সবকালে পাই না তোমায়!
মাঝে মাঝে মনে হয়,
পৃথিবীকে ছাতির ভেতরে এনে - তোমারই সাথে পরিচয় করাই হঠাৎ।
পৃথিবী জানুন, আমরা এক ছাতার তলেই রয়েছি শুস্ক।