নিউজ ডেস্ক : আজ ৯ এপ্রিল কবি সুজাউদ্দিন কায়সারের জন্মদিন । ১৯৫২ সালের এইদিনে তিনি ঢাকার মনিপুরীপাড়ায় জন্মগ্রহন করেন।

তাঁর পৈত্রিক নিবাস নেত্রকোণা । সওর দশকের অন্যতম এই কবির পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সম্পাদনা করেছেন তিনটি কাগজ । ১৯৮৪ সালে ‘ভালবাসার গৃহস্থালি’ কাব্যগ্রন্থটি জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় পুরষ্কার লাভ করে।

কবি সুজাউদ্দিন কায়সার বাংলা কবিতায় একটি প্রতিষ্ঠিত নাম। সত্তর দশকের শুরুতেই তার কাব্যযাত্রা। তারপর দীর্ঘ পরিক্রমণ কবিতা কবিতা খেলায়। সুজাউদ্দিন কায়সার কবি হয়েই জন্মেছে। কবিতার আরদ্ধ পৃথিবীর কাছে সমর্পিত একজন একা এবং একাকী। জীবনের জটিল নিয়ম তাকে ছকবন্দী করতে পারেনি। পারিবারিক সদস্যবৃন্দ অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করলেও তিনি যান নি। পাশ্চাত্যের বর্ণাঢ্য জীবন তাকে মোহগ্রস্ত করেনি। স্বাধীনতা-উত্তর তরুণ যুবা। স্বাধীনতা এবং জন্মভূমির প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে এই কবি শুধু কবিতা লিখতে চেয়েছেন। কবিতার সেই ঐন্দ্রজালিক ছলনায় নিমগ্ন একজন কাব্যপুরুষ।

কেমন কবিতা লেখেন সুজাউদ্দিন কায়সার? আধুনিক বাংলা কবিতার প্রথাসিদ্ধ ভাব-ভাষা, প্রকৃতি, মানুষ, চাওয়া-পাওয়া, প্রেম-পরাজয় যন্ত্রণাক্লিষ্ট পৃথিবীর হাহাকার ধারণ করবার মিষ্ট্রিক পরিমিত শব্দভান্ডার এই কবির মধ্যে প্রকটভাবে বহমান। কিন্তু তা উচ্চকিত নয়। মৃন্ময় কণ্ঠস্বরের এ কবি নৈব্যক্তিক অদৃশ্য ইঙ্গিতময়তায় ধারণ করেছেন কবিতার শরীর। যা প্রচলিত কাব্যভাষা, আঙ্গিকে, উপমা, উৎপ্রেক্ষায় আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। আর কবিকে করেছে স্বাতন্ত্র্য অভিধায় যুক্তিযুক্ত।

সুজাউদ্দিন কায়সার সাধারণ কবিতা লেখেন না। তার প্রতিটি কবিতায় থাকে দার্শনিক জিজ্ঞাসা, পরিপূর্ণ কাব্য চরিত্র। যা পাঠককুলকে হামেশাই মুগ্ধ করে না। কিন্তু একটি মুগ্ধ আকাঙ্ক্ষিত সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। যা সমকালীন বাতাস অতিক্রম করে মহাকালের দিকে স্ফুরিত। সেই বিরলপ্রজ কাব্যিক মেধা নিয়েই কবি সুজাউদ্দিন কায়সারের দীর্ঘগতায়াত। কবিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ০৯, ২০১৫)