নিউজ ডেস্ক, ঢাকা : ভালোবাসা। জমে যাওয়া রক্তে প্রবাহ আনে। বোধকে জাগিয়ে তোলে। হতাশাকে ভোলায়। জীবনকে করে মহিমান্বিত। এই ভালোবাসা শুধু কোন নারী-পুরুষের প্রণয়বিলাস নয় অর্থবহ জীবনপথের আলোকবর্তিকাও।

জার্মান মনোবিজ্ঞানীরা বলেছেন, রোমান্টিক সম্পর্ক তরুণ-তরুণীদের নেতিবাচক আবেগ কমায় এবং ব্যক্তিত্ব বিকাশে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

সব মানুষের মধ্যে থাকা ৫টি সাধারণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অন্যতম ‘নিউরোটিসিজম’ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে জার্মান মনোবিজ্ঞানীরা এই দাবি করেছেন। ইন্দো এশিয়ান নিউজের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।

‘নিউরোটিসিজম’ হলো মানুষের মৌল চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের এমন একটি দিক, যা থেকে আমাদের মধ্যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, ঈর্ষাকাতরতা, দ্বেষ এবং কোনো বিষয়ে মানসিক আচ্ছন্নতা ইত্যাদি প্রবণতার কম বা বেশি উপস্থিতি বোঝা যায়।

জার্মানির ইয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ক্রিস্টিন ফিন বলেন, নিউরোটিক মানুষেরা সাধারণত উদ্বেগ আক্রান্ত হয়ে থাকেন, অনিরাপদ বোধ করেন এবং সহজেই বিরক্ত হয়ে যান। তাদের মধ্যে বিষণœতার প্রবণতা থাকে এবং অনেক সময়ই তারা আত্মমর্যাদাবোধ হারিয়ে ফেলতে পারেন। আর সাধারণত এমন মানুষেরা নিজেদের জীবন নিয়ে অতৃপ্তিতে ভোগেন।

মনোবিজ্ঞানী বলেন, আমরা দেখতে পেয়েছি যে নিউরোটিক মানুষেরা ভালোবাসার সম্পর্কে জড়ালে অনেকটাই স্থিতিশীল হয়ে ওঠেন এবং তাদের ব্যক্তিত্ব সুদৃঢ় হয়ে ওঠে।

এই গবেষণার জন্য ভালোবাসার সম্পর্কে জড়ানো ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী ২৪৫টি জুটিকে নয় মাস ধরে পর্যবেক্ষণ করেন এবং তিন মাস পর পর প্রত্যেক তরুণ-তরুণীর আলাদা সাক্ষাৎকার নেন মনোবিজ্ঞানীরা। একটা বিশেষ প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে মনোবিজ্ঞানীরা তরুণ-তরুণীদের মধ্যে নিউরোটিসিজমের প্রভাব এবং ভালোবাসার সম্পর্কের বিষয়ে তাদের সন্তুষ্টি পর্যালোচনা করেন।

এই গবেষণার জন্য দৈনন্দিন জীবন-যাপনের নানা ঘটনা এবং সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কের ওপর সেগুলোর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়েও মনোবিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলতে হয়েছে অংশগ্রহণকারীদের। মনোবিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন ভালোবাসা বা প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোর পর তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ধীরে ধীরে নেতিবাচক আবেগ কমে আসতে থাকে।

মনোবিজ্ঞানী ফিন বলেন, সবকিছুর মধ্যেই হতাশা খুঁজে বেড়ানোর বদলে ভালোবাসা আমাদের আরও বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে জীবনকে সামলাতে সহায়তা করে।

জার্নাল অব পারসোনালিটিতে প্রকাশিত এই গবেষণা প্রতিবেদনে মনোবিজ্ঞানীরা মন্তব্য করেন একটা সম্পর্কে জড়ানোর মধ্য দিয়ে তরুণ-তরুণীরা শুধু জিততেই পারেন।

(ওএস/পি/মে ১৩,২০১৪)