সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : অবরোধ চলাকালে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত মানবাধিকার কর্মী মোসলেম আলি হত্যা মামলার মূল আসামীরা গত পাঁচ মাসেও ধরা পড়েনি। আসামীদের সঙ্গে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার সখ্যতার ফলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

তদন্তকারি কর্মকর্তা পরিবর্তনও আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী, সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার ও কালীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে বার বার ছুঁটে গেলেও নিহতের স্ত্রী আফরোজা সুলতানার (৫০) ভাগ্যে জুটেছে এক রাশ হতাশা। একপর্যায়ে তিনি বিচার চাওয়ার মত মানসিকতা হারিয়ে ফেলেছেন। এমনকি এ মামলার অন্যতম আসামী আজিজুর রহমান হাইকোর্ট থেকে সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পাওয়ায় তিনি হতাশ হয়েছেন।

ডায়াবেটিকসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত আফরোজা সুলতানা জানান, তার স্বামী মোসলেম আলী(৬০) বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার কালীগঞ্জ শাখার সভাপতি ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। গত ১৭ ডিসেম্বর সকালে অবরোধ চলাকালে যৌথবাহিনীর সঙ্গে সড়কের উপর ফেলে রাখা গাছের গুড়ি অপসারন করছিলেন তিনি।

রামনগর থেকে দুসহকর্মীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় দুপুর পৌনে দুটোর দিকে মুকুন্দ মধুসুধনপুর চৌমুহুনী নামক স্থানে জামায়াত- বিএনপির চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় রাতেই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আজম খান ও উপপরিদর্শক সেকেন্দার আলী জোরপূর্বক ভয় দেখিয়ে তাদের একটি মনগড়া এজাহারে সাক্ষর করিয়ে নেয় তার ভাগ্নে সোনাতলা গ্রামের ওমর শরীফের কাছ থেকে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক সোবহানকে নিয়ে তিনি ও তার ছেলে জাকির হোসেন গত ৭ মে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান। পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর সকল ঘটনা শোনর পর তদন্তকারি কর্মকর্তা পরিবর্তনের কথা বলায় তাদেরকে ধমক দেন। এমনকি মামলার কোন আসামী ধরার ব্যাপারে অন্য কোন প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছে না যাওয়ার জন্য তাকে (আফরোজা) বারবার সতর্ক করেন। এমনকি কোথাও যাওয়ার চেষ্টা করলে নজরদারি করা হবে বলে তাকে জানানো হয়।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম রহমান জানান, মোসলেম হত্যা মামলাটি চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে সম্প্রতি পুলিশ সুপারের মনিটরিং সেলে আলোচনা করা হয়েছে। আসামীরা ধরা না পড়লেও খুব শীঘ্র আদালতে অভিযোপত্র দাখিলের প্রক্রিয়া চলছে।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, এ ব্যাপারে তার কিছু জানা নেই।

(আরকে/জেএ/মে ১৪, ২০১৪)